শিরোনাম
◈ পোশাক রপ্তানিতে বিশ্ব শীর্ষ দেশ ও বাংলাদেশের অবস্থান ◈ সাংবাদিক তুহিন হ ত্যা য় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আসামিরা! (ভিডিও) ◈ রাজধানীর নিউ মার্কেট থেকে 'সামুরাই' চাপাতিসহ ১১০০ ধারালো 'অস্ত্র' উদ্ধার (ভিডিও) ◈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার জাহাঙ্গীরনগরে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ◈ নীলা ইস্রাফিলের ফেসবুক পোস্টে চটেছেন তুষার, দিলেন কড়া জবাব ◈ পূর্ব ইউক্রেনের বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, ইউরোপীয়দের চোখে পুতিনের কৌশল ◈ তুষার আমার সাথে নেপালে বসে যেসব ভিডিও আমাকে পাঠিয়েছে, যেসব নগ্ন জিনিস আমার কাছে আছে: নীলা ইস্রাফিলের (ভিডিও) ◈ যশোরে ডিবি হেফাজতে থাকা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মচারী সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কারাগারে ◈ নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান তারেক রহমানের ◈ উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে সরকারের বিবৃতি

প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৮:৪১ রাত
আপডেট : ১০ মে, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কেন পিত্তথলিতে পাথর হয়, লক্ষণ ও চিকিৎসা

পিত্তথলিতে পাথর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষণ প্রকাশ করে না, কিন্তু অনেক সময় এই পাথর দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পিত্তথলির পাথর সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।

পিত্তথলির পাথর কী ও কেন হয় : অধ্যাপক ফারুক আহমেদ বলেন, পিত্তথলি হলো লিভার বা যকৃতের নিচে অবস্থিত একটি ছোট থলির মতো অঙ্গ। এটি হজমে সহায়তা করার জন্য পিত্ত সংরক্ষণ ও নিঃসরণ করে। এই পিত্তথলিতে পিত্ত থাকে যেটি সাধারণত তরলে পূর্ণ থাকে, পানির চেয়ে একটু ঘন থাকে। কোনো কারণে তরল পিত্ত বা পিত্তরস ধীরে ধীরে ঘন হয়ে যেতে পারে, ঘন হয়ে শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং পাথর হয়ে যেতে পারে। তখন সেটিকে গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলির পাথর বলে। স্বাভাবিকভাবে পিত্ত তরল থাকে এই তরল পিত্ত কোনো কারণে যখন জমে শক্ত হয়ে যায় তখন তাকে পিত্ত পাথর বলে।

পিত্তে অনেক রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা নিজেদের মধ্যে একটি সুষম অবস্থা বা ভারসাম্য বজায় রাখে। এই ভারসাম্য যদি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায় তখন তরল পিত্ত শক্ত হয়ে পাথর হয়ে যেতে পারে। রাসায়নিক উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন- পিত্তথলিতে যেকোনো ধরনের রোগ হলে, টিউমার, কোনো ধরনের সংক্রমণ। এছাড়া রক্তের রোগ থ্যালাসেমিয়া, হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়া পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে পিত্তথলিতে পাথর কেনো হয় তার সঠিক কারণ জানা যায়নি। পিত্তে পাথর যেকোনো বয়সে যে কারোরই হতে পারে।

চিকিৎসাশাস্ত্রে ৫এফ যা পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলো বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যাদের ৫টি এফ আছে তাদের পিত্তে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেশি। যেমন-

ফিমেল: পুরুষদের তুলনায় নারীদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ফোরটি: যাদের বয়স ৪০ বা তার বেশি বয়স তাদের পিত্তথলির পাথর হওয়ার প্রবণতা বেশি।

ফ্যাট: অতিরিক্ত স্থূলতা বা যাদের ওজন বেশি তাদের ঝুঁকি বেশি।

ফার্টাইল: সন্তান আছে, গর্ভধারণ করেছেন, সন্তান জন্মদানে সক্ষম বয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

ফ্ল্যাটুলেন্স: যাদের পেটে গ্যাস বেশি হয়, পেট ফাঁপা থাকে তাদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

অধ্যাপক ফারুক আহমেদ বলেন, ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পিত্তের পাথর কোন লক্ষণ প্রকাশ করে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীরব থাকে, কোনো ধরণের ব্যথা হয়না। সাধারণত অন্য কোনো কারণে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করার সময়ই বেশিরভাগ পিত্তথলির পাথর শনাক্ত হয়। তবে যাদের ভেতর লক্ষন প্রকাশ পায় তার মধ্যে অন্যতম হলো-

১. পেটে অসহনীয় এবং তীব্র ব্যথা হয়, সাধারণত পেটের উপরিভাগে ডানদিকে বা মাঝখানে ব্যথা হয়।

২. কোনো কারণে পিত্তে সংক্রমণ হলে ব্যথার সঙ্গে জ্বর হয়।

৩.  পাথর যদি পিত্তথলি থেকে সরে পিত্তনালীতে চলে আসে তাহলে ব্যথা, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এবং জন্ডিস হয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসা :  পিত্তথলিতে পাথর হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পিত্তথলির অপসারণ করাই হলো একমাত্র চিকিৎসা। পিত্তথলি কেটে ফেলে দিতে হবে, বর্তমানে এটি ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে করা হয়। আগে পেট কাটতে হতো কিন্তু ল্যাপারোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমে পেট কাটতে হয় না, পেটে ছিদ্র করে পাথর বের করে আনা হয়। পিত্তথলির পাথরে যাদের ব্যথা হয় তাদের অবশ্যই অস্ত্রোপচার করতে হবে। যদি ব্যথা না হয় তাহলে অস্ত্রোপচার না করার কথা বলেন অধ্যাপক ফারুক আহমেদ।

পিত্তথলির পাথরে ব্যথা হওয়ার পর যদি অস্ত্রোপচার না করা হয় তাহলে বার বার ব্যথা হবে এবং জটিলতা বাড়বে। একসময় পাথর পিত্তথলি থেকে সরে পিত্তনালীতে চলে আসলে মারাত্মক উপসর্গ তৈরি করবে এবং জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসা করতে হবে রোগীকে।

পিত্তথলির পাথর পিত্তনালীতে চলে আসলে অস্ত্রোপচার করে বের করা হয় না, সেক্ষেত্রে এন্ডোস্কোপিক মাধ্যমে বের করা হয়। এন্ডোস্কোপিক রেট্রোগ্রেড কোলাঞ্জিওপ্যানক্রিটোগ্রাফি (ইআরসিপি) যন্ত্রের মাধ্যমে পিত্তনালী থেকে পাথর বের করে আনা হয়।

তাই পিত্তথলিতে পাথরজনিত কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিরোধ :  পিত্তথলির পাথর শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। যেমন- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটার অভ্যাস করতে হবে, কাঙ্খিত মাত্রার ওজন ঠিক রাখতে হবে। এছাড়া জন্মগত  কোনো রক্তের রোগ থাকলে সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। উৎস: ডেইলি স্টার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়