ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
আজ শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ নিয়ে উপাচার্যের আলোচনার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন হলের সামনে গিয়ে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য আহ্বান জানান একদল বিক্ষোভকারী। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে ছয় দফা দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, ভবিষ্যতে হলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী এবং গণরুম ও গেস্টরুমে ‘র্যাগিং’ সংস্কৃতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তির সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন, অতি দ্রুত হল সংসদ গঠন করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা, রাজনৈতিক সংগঠনের যেকোনো উপহারসামগ্রী একমাত্র হল প্রশাসনের মাধ্যমে প্রদান এবং এতে ওই সংগঠনের নাম বা কোনো চিহ্ন ব্যবহার না করা, হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিরাগতদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ, হলের মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়া হয়েছে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হলভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আজ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের শিক্ষার্থী শরিফুল আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের হলগুলোতে কোনো রকমের ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছি না। ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকুক, ক্যাম্পাসে আমাদের সুন্দর একটি সহাবস্থান তৈরি হোক, সে ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। আমরা হলে হলে র্যাগিং কালচার, গেস্টরুম কালচার, রাতের পর রাত অত্যাচার দেখেছি। কেউ যেন পুনরায় এসব র্যাগিং কালচার, গেস্টরুম কালচার চালু করতে না পারে, সে জন্য আমরা বিক্ষোভে নেমেছি।’ তিনি বলেন, কোনো হলে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করা যাবে না, এটা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, আগামীকাল রোববার তিনি প্রশাসনিক সভা করবেন। ওই সভায় তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।
উপাচার্যের এই আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান। উৎস: প্রথম আলো।