মনিরুল ইসলাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি দিয়ে দেশে অচলাবস্থা তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যা জনগণ কখনো মেনে নেবে না। তিনি অভিযোগ করেন, নতুন প্রজন্ম এখনো সঠিকভাবে ভোট দিতে শেখেনি, এর মধ্যেই পিআর পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, “কিছু দল হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির কথা বলছে এবং নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এতদিন এ বিষয়ে কিছু বলেনি তারা। এখন কে তাদের এই ‘ট্যাবলেট’ খাওয়ালো, সেটিই প্রশ্ন।”
তিনি আরও বলেন, “যে দল এখনও পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক অবয়ব নিতে পারেনি, তারা সবকিছু অ্যাডভেঞ্চার মনে করে। কিন্তু দেশ চালানো আর অ্যাডভেঞ্চার এক নয়।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, “১৭-১৮ বছর ধরে আওয়ামী লীগ শাসন-শোষণ ও গুম-খুন চালিয়েছে, যা দেশের মানুষ ১৭০০ বছরেও ভুলবে না। বিদেশে বসে ভারতের প্ররোচণায় ষড়যন্ত্র চলছে নির্বাচন বানচালের জন্য। কিছু দল চায় না নির্বাচন হোক, কারণ তারা মনে করে, নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।”
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, “এ অনির্বাচিত সরকার দেশের অবস্থা আরও খারাপ করে দিয়েছে। শেখ হাসিনা ১২টা বাজিয়ে গেছেন, এই সরকার ২৪টা বাজিয়ে দিয়েছে।”
মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপিকে সব ঘটনার জন্য দোষারোপ করা হচ্ছে। গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় যে দলের অস্তিত্বই নেই, সেই দলের লোকজন জড়িত বলে এখন দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। বিচার ও নির্বাচন পাশাপাশি চলতে পারে।”
এ সময় তিনি আকাশ সংস্কৃতিতে ভারতের আধিপত্যের সমালোচনা করে বলেন, “আমাদের চ্যানেল না দেখালে, তাদের চ্যানেলও বাংলাদেশে প্রচার হওয়া উচিত নয়। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকতে পারে, কিন্তু প্রভু নয়।”
সিঙ্গাপুর সফরের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, “সেখানে আন্দোলনে আহত ১২-১৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন, বেশিরভাগের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সরকার তাদের পাঠালেও পরবর্তীতে আর খোঁজ নেয়নি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে শহীদদের মর্যাদা ও আহতদের যথাযথ সহায়তা দেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জাসাস কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, সাবেক সভাপতি এম এ মালেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত আজিজ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব শফিকুল হাসান রতন।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়, যা উপস্থিত সবাইকে বিমোহিত করে।
