শিরোনাম
◈ ইসরায়েলকে থামাতে সম্মিলিত কূটনৈতিক পদক্ষেপ জরুরি: ওআইসি সম্মেলনে তৌহিদ হোসেন ◈ ইরানে ডজনখানেক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দাবি ইসরায়েলের ◈ সাংবিধানিক কাউন্সিল : কিছু প্রশ্ন ও বিএনপির আপত্তি ◈ সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম চূড়ান্ত করেছেন খামেনি ◈ সাবেক সিইসি-ইসিদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি: বিতর্কিত তিন নির্বাচন ◈ ‘বিস্মিত’ ইসরাইল, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইরানের ড্রোন হামলা ◈ নির্বাচনে জোর, আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ◈ কী কী অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে ইরান-ইসরাইল সংঘাতে? ◈ বিদেশে টাকা পাঠানো আরও সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক, সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার! ◈ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রো ও ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের মধ্যে ফোনালাপ, কী কথা হলো তাদের

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০২৫, ০৮:২৮ রাত
আপডেট : ২২ জুন, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

নির্বাচনে জোর, আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল

মহসিন কবির: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। একক প্রার্থী দেয়ার  চেষ্টা করে নিজ নিজ দল। জোটের চিন্তা পরে। 

বিএনপি: নির্বাচনে একক প্রার্থী দেয়ার জন্য আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপি। এ বিষয়ে দলের বিশস্ত তিনজন সরেজমিনে কাজ করছেন। তারা খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কার কী অবস্থা। জরিপে বেশিমাত্রায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অপেক্ষাকৃত তরুণ, মেধাবী ও ইমেজসম্পন্ন নেতাদের। 

২০০১ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত যারা দলীয় মনোনয়নে এমপি হয়েছেন বা মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে ২০১৮ সালের মতো এবার এক আসনে একাধিক জনকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হবে না। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, এবার দলের সিদ্ধান্ত একক প্রার্থী নির্ধারণ করার। ২০১৮ সালের মতো একাধিক প্রার্থী হবে না?।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন আসনে বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নামেন। কোথাও কোথাও নেতৃত্ব নিয়ে সংঘাতও হয়। এ সব সংঘাত এড়িয়ে চলতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় কিছু নেতাকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। যদিও সেসব এলাকায়ও একাধিক প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন।

জানা গেছে, বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদেরও বিবেচনায় রাখা হবে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের পর একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড। দলটির গঠনতন্ত্রের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিংবা অন্য যে কোনো নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী মনোনয়নে দলের একটি পর্লামেন্টারি বোর্ড থাকবে। জাতীয় স্থায়ী কমিটিই হবে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিংবা যে কোনো নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করবে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা বলেন, পৃথিবী এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজ। এখন রাজনীতি করতে হলে নেতাদের বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট থাকতে হয়। ফলে তরুণ ও শিক্ষিত এবং জনপ্রিয়তা আছে- এবারের নির্বাচনে এমন অনেক প্রার্থী দেওয়া হবে। এর ফলে অনেক সিনিয়র ও প্রভাবশালী নেতা মনোনয়ন না-ও পেতে পারেন। মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছাড় দেওয়া হবে। সে কারণেও কেউ কেউ মনোনয়নবঞ্চিত হতে পারেন। সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন দলের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা।

জানা গেছে, মিত্র দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতাকে ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার ইঙ্গিতও দিয়েছে বিএনপি হাইকমান্ড। আবার ঢাকার দুই-তিনটি আসনও মিত্রদের ছাড়তে হতে পারে বলে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্র।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে দল পুনর্গঠনের কাজ শেষ করতে চায় বিএনপি। ইতোমধ্যে দল পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আমরা দ্রুতই কাউন্সিলের মাধ্যমে সকল কমিটি করব। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন নির্দেশনা পেয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে বরিশাল বিভাগে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও সে কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ বলেন, আমরা ভোলায় ইতোমধ্যে কয়েক দফা সভা করেছি। আশা করি, শিগগিরই উপজেলা কমিটিগুলো গঠন করতে পারব। জুলাইয়ের মধ্যেই জেলা কমিটিও গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। তিনিও গত কয়েক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহবুবুর রহমান শামীম বলেন, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি ইউনিটে কার্যক্রম চালু আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরাঞ্চলের একটি বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা বিএনপির এক নেতা জানান, কমিটি গঠনে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল। দলে অনেক নেতা আছেন, আবার সবাই দলের নেতৃত্ব দিতে চান। কিন্তু সবাই তো আহ্বায়ক-সদস্যসচিব হবেন না। কেউ বাদ পড়ে গেলেই তাদের অনুসারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে। যদিও পরে আবার তা সমাধানও করা হচ্ছে। কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়নের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি কোথাও সম্মেলন করতে পারেনি, কেন্দ্র থেকে কমিটি দেওয়া হয়েছে। এবার ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, জেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটিগুলো হচ্ছে। ৫ আগস্টের আগে সাড়ে ১৫ বছর ধরে আমরা সাংগঠনিক কর্মকা- করতে পারিনি। ঘরে বসে করতে হয়েছে, প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করতে হয়েছে। তখন অন্য এক ধরনের বাস্তবতা ছিল। এখন আমরা কর্মীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কমিটি করছি। সংগঠনকে প্রাণবন্ত রাখতে হলে একটা গণতান্ত্রিক ধারায় কর্মীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের আকাক্সক্ষা ও ইচ্ছার প্রতিফলন থাকতে হবে কমিটিতে। তাদের ভোটে কমিটি হতে হবে। এটিই হচ্ছে আমাদের স্পিরিট। সে অনুয়ায়ী কাজ হচ্ছে।

জামায়াত: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। এরইমধ্যে ২৯৮ টি আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গণসংযোগের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থী এবং নির্বাচনি কাজে সম্পৃক্ত দায়িত্বশীলদের প্রশিক্ষিত করছে জামায়াত। একইসঙ্গে নির্বাচনি কেন্দ্র ও বুথভিত্তিক কমিটি গঠন করে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি।

সূত্রমতে, কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক সংশ্লিষ্ট আসনের দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। জামায়াতর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জতুল্লাহ এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সমন্বয় করছেন বলে জানা গেছে।

এসময় প্রার্থীদের নির্বাচনি বিভিন্ন আইনকানুন, প্রচারণার কৌশল সহ তাদের করণীয় নানা নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এছাড়া আঞ্চলিক দায়িত্বশীলরাও প্রার্থীদের নিয়ে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে প্রার্থী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আসন ও ভোট কেন্দ্রভিত্তিক দলীয় কমিটি নিয়েও সমাবেশ সহ নানা কর্মকান্ড চালাচ্ছে জামায়াত। এসময় তাদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন নেতারা। পর্যায়ক্রমে বুথভিত্তিক কমিটি নিয়েও এ ধরণের সমাবেশ ও মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচন ঘিরে আগাম প্রচার, গণসংযোগের পাশাপাশি দলীয় দায়িত্বশীলদেরকে প্রস্তুত করছে জামায়াত।

প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে ঢাকা-৬ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান আমার দেশকে বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে তার নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়, তেমনি জামায়াতের দলীয় প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসময় প্রার্থীদের করণীয়, আইন মেনে চলা, ভোট কেন্দ্র নিয়ে নানা পরিকল্পনা, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো সহ নানা বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া হচ্ছ্। এরইমধ্যে ঢাকার প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ হয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

জানা গেছে, আগামী নির্বাচন ঘিরে আসনভিত্তিক এবং ভোট কেন্দ্র ও বুথভিত্তিক কমিটি গঠন করেছে জামায়াত। এরইমধ্যে আসন ও কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিগুলোর সদস্যদের সক্রিয় করছে দলটি। ঈদের পর এ তৎপরতা জোরদার হয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন আসনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির সদস্য সমাবেশ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রচার বিভাগের সহকারী সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন গণমক্যেমকে বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন আসনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির সদস্য সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ সহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত থাকছেন। শুক্রবারও ঢাকা-৫ আসনের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে এ ধরণের একাধিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসময় সরকার ঘোষিত সময় সীমার মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল। তবে তার আগে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সহ রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী চায়, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন। যেই নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে। কেউ পেশি শক্তি ব্যবহার করে ভোট কেন্দ্র দখল নিতে পারবে না, নিজেরাই নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না। নির্বাচন মানে যুদ্ধ উল্লেখ করে তিনি এই যুদ্ধে দেশ ও জাতির জন্য বিজয় নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনিদের্শনা প্রদান করেন।

শফিকুল ইসলাম মাসুদ উপস্থিত দায়িত্বশীল নেতাদেরকে আগামী নির্বাচনে ভোট ডাকাতদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন কৌশল ও দিকনিদের্শনা দিয়ে বলেন, ভোট আমানত। এই আমানত রক্ষায় জনগণের পাশে থাকতে হবে। প্রতিটি ভোটার নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে এসে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত সার্বিক সহযোগিতা করতে তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ অন্য নেতারা। শুক্রবার বিভিন্ন আসনে ইউনিট দায়িত্বশীলদের নিয়ে সমাবেশ করেন তিনি। এছাড়া জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকেও শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর এলাকায় রুকনদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের যুব বিভাগের সেক্রেটারি হাসানুল বান্না চপল জানান, ঢাকা উত্তর এলকায় সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে প্রায় ৯৮ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রভিত্তিক একটি কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া বুথভিত্তিকও কমিটি রয়েছে। নির্বাচনি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এসব কমিটি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন নেতারা। নির্বাচন ঘিরেই দলীয় কার্যক্রম বেশি চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: নির্বাচনকে সামনে রেখে সব আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীসহ সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল নেতাদের মতামত (ভোট) নিচ্ছে দলটি।

তৃণমূলের মতামত নিয়ে কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের পরামর্শের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হবে প্রার্থী। এ মাসের মধ্যে মতামত নিয়ে আগামী মাঝের মাঝামাঝি সময়ে প্রার্থী চুড়ান্তের কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলের মতামত নিতে শুক্রবার গাইবান্ধা এলাকায় ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ। তিনি গণমাধ্যমকে বলে, ইসলামী আন্দোলন ও অঙ্গসংগঠনগুলোর স্থানীয় নেতারা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিচ্ছেন। সেই ভোটগুলো কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা সেগুলো বিশ্লেষণ করে প্রার্থী ফাইনাল করবেন।

তিনি বলেন, এ মাসের মধ্যেই সারাদেশের প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলের মতামত নেয়া শেষ হবে। এগুলো পর্যালোচনা করে আগামী মাসের দুই সপ্তাহের মধ্যেই তা চূড়ান্ত করা হতে পারে।

দলের সহকারী প্রচার সম্পাদক কে এম শরিয়তুল্লাহ জানান, সারাদেশে প্রার্থী বাছাইয়ের এই কার্যক্রম চলছে। ঢাকার প্রার্থী বাছাইয়ে মতামত নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে শুক্রবার।

সূত্রমতে, শুক্রবার ঢাকা-১৬ ও ১৮ আসনের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য মতামত গ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

এ সময় তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষে ইসলামপন্থীদের একটি ভোট বাক্স প্রদানের ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে। এ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় দল নির্বাচনি আশ্বাস দেয়া শুরু করে দিয়েছে। যা অতীতেও দিয়েছিল, কিন্তু ফলাফল হয়েছে শূণ্য। তাদের ষড়যন্ত্রে পানা দেয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন বিএনপি চাইলে পিআর পদ্ধতিতে হবে, না চাইলে হবে না; এটা অযৌক্তিক কথা। বিএনপি যদি ফ্যাসিবাদমুক্ত রাজনৈতিক চর্চা করে, তাহলে কেন তারা পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়