কাজী রাশেদ, চান্দিনা (কুমিল্লা) : শতবর্ষ পার করা এক সময়ের ঐতিহ্যের ধারক চান্দিনা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল ১৯১৬ সালে ব্রিটিশ সরকার শাসনামলে ত্রীপুরা রাজ্যের তৎকালীন রাজা বীর বিক্রম মাণিক্য এর সময়। তখন এর নাম ছিল বরকামতা গভঃ এইডএডএই ই বিদ্যালয়।১৯৫৬ সালে এর আবার নামকরণ করা হয় চান্দিনা হাই স্কুল ।১৯৮০ সালে আবারো নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
২০১৩ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় চান্দিনা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয়করণ করে এর নাম রাখা হয় চান্দিনা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। জাতীয়করণের পর আসন সীমিত হওয়ায় ভর্তি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে। আশে পাশে ভালো বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীদের কে দুরে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকরা।
জাতীয়করণের পর অনেক শিক্ষক অবসর জনিত কারণে বিদায় নেয়ায় দেখা দিয়েছে শিক্ষক দৈন্যতা। জাতীয়করণের পরপর বিদ্যালয়ের জেনারেল শাখায় এমপিও ভূক্ত শিক্ষক ছিল ১০জন। সাথে ছিল খন্ডকালীন শিক্ষক ১০জন। আর জাতীয়করণ করার আগে এমপিও ভূক্ত শিক্ষক ছাড়া আতিরিক্ত ১৬জন খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল। ছাত্র সংখ্যা ছিল প্রায় ১৬০০জন। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রতি শ্রেনিতে ৫৫ জন ছাত্র এবং ৫৫ জন ছাত্রী মিলে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৫০ জন।এর বিপরীতে বর্তমানে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৫ জন। ভোকাশনাল নবম ও দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪০ জনের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ৬ জন।
এ দিকে জাতীয়করণের সাত বছরে এমপিও ভূক্ত ১০ জন শিক্ষক থেকে অবসরে গিয়েছেন ৫ জন। খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল তাদেরও বাদ দেয়া হয়েছে। বাকী ৫জন শিক্ষক দিয়ে ১০টি শাখাকে ৫ শাখা করে এবং পাশাপাশি ভোকেশনাল শিক্ষকদের যোগ করে কোন রকমে টেনে হেঁচরে ক্লাশ চালিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি শ্রেণিতে ৫৫জন করে শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও এ বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়ে ১১০ শিক্ষার্থী একত্রে বসিয়ে ক্লাশ করাতে হচ্ছে।এতে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা। এছাড়া বিদ্যালয়ের অবকাঠামো এবং আঙ্গিনায় রয়েছে অপরিছন্নতার ছাপ।
এ বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে যুগের পর যুগ। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিখিল চন্দ্র ভৌমিক জানান, আমরা শিক্ষক সংকটে ঠিকভাবে ক্লাশ নিতে পারছিনা, এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক,সহকারি প্রধান শিক্ষক,অফিস সহকারি ,কম্পিউটার অপারেটর শূন্যপদ রয়েছে। উপজেলা মধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হাছান জানান, “ আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি চান্দিনা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক,সহকারি প্রধান শিক্ষক ,অফিস সহকারির কোন পদই সৃষ্টি হয়নি, এছাড়া ৪ জন সহকারি শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে। আমি শূণ্য পদ সৃষ্টির জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে উপ পরিচালকে জানাব, আমি মনে করি বিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নয়নের জন্য দ্রুত শূণ্যপদ পূরণ প্রয়োজন।