শিরোনাম
◈ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করুন, স্বৈরাচার পতন দিবসে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ◈ মোহাম্মদ এ আরাফাতের নির্বাচনী কার্যালয়ে ককটেল হামলা, আহত এক ◈ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করে হবে আসন ভাগাভাগি: আমু ◈ ৩৩ ওসির বদলির তালিকা নির্বাচন কমিশনে, ডিএমপিতে রাখার প্রস্তাব ◈ সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত ◈ জামিনে মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা দুলু ◈ ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে আরো ২৯ পর্যবেক্ষক সংস্থা ◈ সৌদি বিনিয়োগ বিষয়ক উপ-মন্ত্রীসহ ৩১ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় ◈ দলীয় প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ইসির শাস্তি মেনে নেবে আওয়ামী লীগ: ওবায়দুল কাদের    ◈ আদালত-বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি

প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০২:২৬ রাত
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০২:২৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নির্দেশ না মেনে চলছে কোচিংয়ে পাঠদান

প্রতীকী ছবি

কালের কণ্ঠ: প্রতিবছরের মতো এ বছরও চলমান এসএসসি পরীক্ষা ঘিরে কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে শিক্ষার্থীদের এই পাঠদান কার্যক্রম।

নিজস্ব বা ভাড়া বাসায় কোচিং পরিচালনা করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরের শিক্ষকরাও পড়াচ্ছেন।


এসএসসি পরীক্ষার দিনও কোচিং

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজে এসএসসি পরীক্ষা চলছে। পাশে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টারগুলোতে পাঠদান থেমে নেই। গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার তিন দিন গিয়ে দেখা যায়, এখানে ১২টি কোচিং সেন্টারেই এসএসসিসহ বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। গত মঙ্গলবার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা শুরু হয়েছে সকাল ১১টায়। সে সময়ও পাঠদান চলছিল বর্ণমালা একাডেমি, এসএম শিক্ষা পরিবার, প্রত্যয় একাডেমিসহ ১২টি কোচিং সেন্টারে।

আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিয়াদ বলল, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা ৬ নভেম্বর থেকে শুরু। তাই এক মাস ধরে কোচিং করছি।

এসএম শিক্ষা পরিবারে কোচিংয়ে আসা পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওমর জানাল, নভেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা বলে কোচিংয়ে সব বিষয়ে পড়ছে সে। প্রতিদিন তিনটি বিষয়ের ওপর ক্লাস নেওয়া হয়।

অভিভাবক রেহানা আক্তার বলেন, ‘আমার সন্তান পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। নভেম্বরে পরীক্ষা। স্কুলের পাশাপাশি পড়ালেখার বাড়তি তদারকি করতেই কোচিংয়ে দিয়েছি। ’

পাঠদান কার্যক্রমে যেসব শিক্ষক

মনিপুর গ্রিন রোড স্কুলের গলি, মার্কেট গলি, মোল্লা বাড়ির আশপাশে, কমিশনার গলিসহ কয়েকটি এলাকায় কোচিং সেন্টার গড়ে তুলেছেন মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার শিক্ষক আবু সুফিয়ান, নাইমুল ইসলাম, আছিয়া কামাল, শাহনেওয়াজ পারভীন, ইকবাল ফারুক, তাহমিনা চৌধুরী, নিগার সুলতানা, শরিফুল ইসলাম, মো. মোর্শেদুল আলম ও আবদুল জলিল নিজ নিজ বাসায় কোচিং সেন্টার খুলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব কোচিং সেন্টারে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পাঁচ থেকে আটটি ব্যাচে পাঠদান চলে। প্রতি ব্যাচে রয়েছে ২০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী।

বেশির ভাগ শিক্ষক বলছেন, পরীক্ষার কারণে কোচিংয়ের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এসএসসি পরীক্ষার্থীরা দুপুরের পর ক্লাস করে।

এসএম শিক্ষা পরিবারের স্বত্বাধিকারী বিকাশ আহমেদ বলেন, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পর্যন্ত পড়ানো হয়। তবে বর্তমানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ব্যাচ রয়েছে। তিনি জানান, পরীক্ষার দুই-তিন দিন বন্ধ রেখে সবাই কোচিং সেন্টার চালু করেছেন। তাই তিনিও কোচিং সচল রেখেছেন। প্রত্যয় একাডেমির শিক্ষক মানিক হায়দার জানান, পরিসংখ্যান বিষয়টি জটিল। তাই দুর্বল শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ রাখা হয়েছে।

প্রত্যয় একাডেমির শিক্ষক মানিক হায়দার বলেন, পরিসংখ্যান বিষয়টি জটিল। তাই দুর্বল শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ রাখা হয়েছে।

বর্ণমালা কোচিংয়ের শিক্ষক মাহামুদুর রহমান বলেন, ‘আমি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াই। আমার ভাড়া করা কোচিংয়ে এসএসসির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন সাবলেটে ভাড়া নেওয়া আসাদ স্যার। তিনি পুলিশ স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। ’

ভিকারুননিসার শিক্ষক আবু সুফিয়ান বলেন, আগে অনলাইন ও অফলাইনে কোচিং করাতাম। বর্তমানে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোচিং বন্ধ রয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোচিংয়ের সময়সূচি জানিয়ে এখনো শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠানো হয়।

কর্তৃপক্ষ যা বলছে

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেন, ‘আমরা যেসব আইন ও নিয়ম করে থাকি, অনেক সময় তা বাস্তবায়নে শক্ত প্রতিজ্ঞা থাকে না। কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেটি পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না। শিক্ষকরা ঘরে শিক্ষার্থী পড়ালে তাঁদের ধরাও সম্ভব হয় না। মূলত শিক্ষকদের নৈতিকতা ও প্রতিজ্ঞা ঠিক না থাকার কারণেই তাঁরা এমন কাজ করছেন। বড় বড় কোচিং সেন্টার খোলা থাকলে সেখানে তালা দেওয়া যায়। শিক্ষকদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তো আর ধরে আনা যাবে না। ’

কোচিং পরিচালনার বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেন, ‘শিক্ষকদের কোচিং পরিচালনার বিষয়ে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। তবে কে কোথায় পড়াচ্ছেন, তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। ’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়