মালয়েশিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও পড়াশোনা-পরবর্তী কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে নতুন নির্দেশিকা ও নীতিমালা প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার। উচ্চশিক্ষা ও স্কুল পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
নতুন নীতিমালায় স্টুডেন্ট পাস (শিক্ষার্থীদের জন্য ইমিগ্রেশন পারমিট/ভিসা) প্রদানের ক্ষেত্রে দুটি প্রধান ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্কুল ক্যাটাগরি:
৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা প্রাক-প্রাথমিক (নার্সারি/কিন্ডারগার্টেন) থেকে শুরু করে পোস্ট-সেকেন্ডারি বা প্রি-টার্শিয়ারি স্তর পর্যন্ত এই ক্যাটাগরিতে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।
উচ্চশিক্ষা ক্যাটাগরি:
সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এই ক্যাটাগরিতে স্টুডেন্ট পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভিসা আবেদনের শর্ত
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট পাস আবেদনের ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মানতে হবে। আবেদনের সময় পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১৮ মাস থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অফিশিয়াল অফার লেটার থাকতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া অবশ্যই এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস) সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারীকে মালয়েশিয়ার বাইরে থেকে আবেদন করতে হবে এবং ভিসা অ্যাপ্রুভাল লেটার ও ই-ভিসা পাওয়ার পরই দেশটিতে প্রবেশ করা যাবে। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর নির্ধারিত মেডিকেল স্ক্রিনিং সম্পন্ন করাও বাধ্যতামূলক।
ফি ও পাসের মেয়াদ
স্টুডেন্ট পাসের বার্ষিক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ রিঙ্গিত। ডিপেনডেন্ট বা অভিভাবক পাসের জন্য বার্ষিক ফি ৯০ রিঙ্গিত। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে দেশভেদে আলাদা ফি প্রযোজ্য হবে। সাধারণভাবে স্টুডেন্ট পাসের মেয়াদ ১২ মাস হলেও বিশেষ ক্ষেত্রে এককালীন ২৪ বা ৩৬ মাসের পাস ইস্যু করা হতে পারে।
ডিপেনডেন্ট ও পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ
নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও সুযোগ রাখা হয়েছে। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাবা-মা বা ৭ বছরের কম বয়সী ভাই-বোন থাকতে পারবেন। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী, ১৮ বছরের নিচে সন্তান (বা প্রতিবন্ধী হলে যেকোনো বয়স), পাশাপাশি বাবা-মা বা শ্বশুর-শাশুড়িকে ডিপেনডেন্ট হিসেবে আনার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা সেমিস্টার বিরতি বা সরকারি ছুটির সময়ে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পার্ট-টাইম কাজ করতে পারবেন। তবে কাজের ক্ষেত্র সীমিত থাকবে রেস্তোরাঁ, হোটেল, পেট্রোল পাম্প ও মিনি মার্কেটের মতো নির্ধারিত সেক্টরে।
পড়াশোনা-পরবর্তী নতুন সুযোগ
নতুন নীতিমালার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে পড়াশোনা শেষ করার পরবর্তী সুযোগে। ৩২টি নির্দিষ্ট দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য এক বছরের ‘গ্র্যাজুয়েট পাস’ চালু করা হয়েছে, যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়। পাশাপাশি যোগ্য শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে মালয়েশিয়া না ছেড়েই সরাসরি এমপ্লয়মেন্ট পাস (ক্যাটাগরি-১ ও ২) এ রূপান্তর করে চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন।