শিরোনাম
◈ মণিপুরের শিক্ষার্থীরা ভারতের পতাকা নামিয়ে সাতরঙা পতাকা উড়াল ◈ মবরাজ থামান, শৃঙ্খলা আনেন, না হলে কোনো সংস্কার কাজে আসবে না :ফারুকী ◈ বাংলাদেশে কমছে ভারতের প্রভাব, নয়াদিল্লি এখন কোন পথে যাবে ? ◈ ভূমি কর্মকর্তাদের জন্য হাসনাত আব্দুল্লাহর সতর্কবার্তা! ◈ ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে সারেতে সাকিবের অভিষেক ◈ যাত্রীর লাগেজ থেকে ৬ হাজার ৮০০ ইউরো চুরি, বাংলাদেশ বিমানের ৫ কর্মী আটক ◈ রাষ্ট্রপতির ‘সেকেন্ড হোম’ নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ চট্টগ্রামে প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ ◈ দল করলে নেতাদের কথামতো কাজ করতে হয় : ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের অ্যাডমিন তুষ্টি ◈ সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র দেওয়ার পরিবর্তে যে কুপ্রস্তাব পান অভিনেত্রী নয়নতারা !

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৩, ১০:৪৮ রাত
আপডেট : ২৭ মার্চ, ২০২৩, ১০:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এক বছরে রিজার্ভ কমেছে সাড়ে ২৯ শতাংশ

মনজুর এ আজিজ : বাড়ার পরিবর্তে কমেই যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। গত এক বছরে এ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে। গত বছরের ২২ মার্চ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল যেখানে ৪৪.২৮ বিলিয়ন ডলার, গত ২২ মার্চ তা কমে নেমেছে ৩১.৩০ বিলিয়ন ডলারে। এক বছরে রিজার্ভ কমার হার ২৯.৩১ শতাংশ। অর্থনীতির সর্বশেষ সূচক দিয়ে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্কতার সাথে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। এখন ডলার বিক্রি শুধু সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যেই সীমিত রাখা হয়েছে। এর পরেও চলতি অর্থবছরের ২২ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে। ৯ মাসের কম সময়ে এর আগে এত বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রি আর কখনো করতে হয়নি। এর অন্যতম কারণ হলো ব্যাংকগুলো চাহিদা অনুযায়ী ডলার সংস্থান করতে পারছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪.৪৭ শতাংশ। একই সাথে রপ্তানি আয়ও কাঙ্খিত হারে বড়েনি। গত ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৮২ শতাংশ, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৪.৫৪ শতাংশ। আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শতভাগ এলসি মার্জিন-ব্যবস্থা চালু করা, বড় অঙ্কের পণ্য আমদানিতে তদারকি জোরদার করা এবং বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। আগে পাঁচ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমদানিতে তদারকি করা হতো। এখন তিন মিলিয়ন বা ৩০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে গেলেই বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হচ্ছে। সবমিলেই আমদানির জন্য আমদানি ঋণপত্র খোলার হার আগের চেয়ে কমে গেছে। 

গত বছরের জুলাই-জানুয়ারিতে পণ্য আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যেখানে ৪৬.২৩ শতাংশ, সেখানে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কমে হয়েছে ঋণাত্মক ৫.৬৬ শতাংশ। কিন্তু বকেয়া এলসির দায় পরিশোধ করতে গিয়েই সামগ্রিক ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সবধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি ডলার সঙ্কটের কারণে টাকার বিপরীতে ডলারের দামও বেড়েছে। আগে যেখানে ৮৬ টাকায় ডলার পাওয়া যেত, এখন সেখানে ১১০ টাকার বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে প্রতি ডলারে। ফলে ব্যবসা ব্যয় বেড়ে গেছে। আর প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক ব্যয়ে। আর এ ব্যয় সংস্থান করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের একটাই পথ, ডলারের সরবরাহ বাড়াতে হবে। এজন্য প্রথমেই হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ডলার পাচার বন্ধে সবধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশী শ্রমিকের নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করে রেমিটেন্স-প্রবাহ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানি আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান হচ্ছে না। যেটুকু আসছে তা দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের এলসি খুলতে পারছে না। তবে সরকারি ব্যাংকগুলো সরকারের বিশেষ কেনাকাটায় এলসি খুলছে। সমস্যায় পড়ছে দায় পরিশোধের সময় এসে। সরকারি ব্যাংকগুলোর এমনও এলসি আছে যা পাঁচ থেকে ছয়বার ডেফার্ড (দায় মেটানোর জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে) করতে হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাংকগুলোর সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। একই সাথে বারবার সময় বাড়াতে গিয়ে বাড়তি মাশুলও গুনতে হচ্ছে। 

সরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকারি কেনাকাটার দায় মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান তারা করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে সরকারি কেনাকাটার দায় মেটানোর জন্য যে পরিমাণ সহযোগিতা প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক আর আগের মতো রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে পারছে না।

এমএ/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়