নিজস্ব প্রতিবেদক : হুন্ডির মাধ্যমে অর্থপাচার বন্ধ, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা, দেশীয় কর্মসংস্থানের স্বার্থ রক্ষা ও এয়ারলাইন্সগুলোর গুণগত যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদেশি এয়ারলাইন্সের জেনারেল সেলস এজেন্ট বা জিএসএ নিয়োগ আইন অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এয়ারলাইন্স জিএসএতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার (০২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্সের জিএসএ এজেন্টগুলোর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর স্বার্থে জিএসএ নিয়োগ আইন বাতিল করা হলে কর্মসংস্থান হারাবে দেশের মানুষ। পাশাপাশি বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় এনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ব্যর্থ হবে সরকার, ফলে বাড়বে গ্রাহক হয়রানি।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওমান এয়ারের জিএসএ এয়ার গ্যালাক্সির কর্মকর্তা নাবিলা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন এয়ার ফ্রান্সের জিএসএ বেঙ্গল এয়ারলিফটের মুনির ও সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের জিএসএ ইউনাইটেড লিংকের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জিএসএগুলো এয়ারলাইন্স ও যাত্রীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে এবং মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বিদেশি সদর দপ্তরে পৌঁছে দেওয়া কেবল বিদেশি কান্ট্রি ম্যানেজার দিয়ে সম্ভব নয়। ১৯৭০-এর দশক থেকে জিএসএ বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের উপস্থিতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, এমনকি প্যান অ্যাম, ইউনাইটেড, লুফথানসা ও কেএলএম-এর মতো বিখ্যাত এয়ারলাইন্স চালু করতেও সহায়তা করেছে দেশীয় জিএসএগুলো।
মানববন্ধনে এয়ারলাইন্স জিএসএতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে রফিকুল ইসলাম বলেন, জিএসএ নিয়োগের চলমান নিয়ম লঙ্ঘন করলে প্রতি বছর প্রায় ১০০ কোটির বেশি রাজস্ব হারাবে সরকার।
অতীত অভিজ্ঞতার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, সাউদিয়া, থাই এয়ারওয়েজ ও এয়ার ইন্ডিয়ার মতো বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো জিএসএ ছাড়া বাংলাদেশে পরিচালিত হলে বাজারে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘ টিকিট লাইনের অভিযোগ উঠেছিল বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। জিএসএ বাধ্যতামূলক হওয়ার পর পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে উন্নত হয় এবং টিকিট সিন্ডিকেশন অনেকাংশে কমে যায়।
মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টা, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।