শিরোনাম
◈ বৃটেনে বাংলাদেশি প্রভাবশালীদের সম্পত্তি লেনদেন নিয়ে গার্ডিয়ানের বিস্ফোরক প্রতিবেদন ◈ জামায়াতের সমাবেশে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের বার্তা ◈ এনসিপির নিবন্ধনে ঘাটতি: ৩ আগস্টের মধ্যে সংশোধনের সময় দিয়েছে ইসি ◈ ট্রাম্পের ক্ষোভে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, মামলা ১০ বিলিয়ন ডলারের ◈ নারী সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা: ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণ ও ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ ◈ রাজধানীর পল্লবীতে বাসে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা ◈ ব্রহ্মপুত্রে চীনের দৈত্যাকার বাঁধ: ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগ উপেক্ষা করেই প্রকল্পের উদ্বোধন ◈ জাতীয় মানবাধিকারের নামে সমকামিতার অফিস করতে দিবো না: মামুনুল হক ◈ মির্জা ফখরুলের ভাইয়ের ওপর হামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত : ১৮ জুলাই, ২০২৫, ০৪:৫৬ দুপুর
আপডেট : ২০ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বোয়িং ও গম কিনছে বাংলাদেশ সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং দেশটির আরোপিত উচ্চ শুল্কের চাপ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার বড় ধরনের আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১৪টি বোয়িং উড়োজাহাজ এবং প্রায় তিন লাখ টন গম আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

আগামী রোববার ঢাকায় গম আমদানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, যা দুই দেশের মধ্যে নতুন বাণিজ্য সহযোগিতার সূচনা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাণিজ্য সচিব গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতার সূচনা হতে যাচ্ছে।" তিনি আরও জানান, বোয়িংয়ের সঙ্গে উড়োজাহাজ কেনার আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। তবে ডেলিভারির সময়সূচি নির্ভর করছে সংস্থাটির উৎপাদন সক্ষমতার ওপর। এই দুটি বড় আমদানির মোট আর্থিক মূল্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এই উদ্যোগ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে জোর আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা। এই শুল্ক বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম (২০%) ও ইন্দোনেশিয়ার (১৯%) চেয়ে অনেক বেশি, যা রপ্তানি খাতে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় দফার বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লক্ষ্য হলো, আগামী ১ আগস্ট নতুন শুল্ক হার কার্যকর হওয়ার আগেই একটি পারস্পরিক সমঝোতামূলক চুক্তিতে পৌঁছানো। বাণিজ্য সচিব বলেন, "আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করছি।" আলোচনার প্রস্তুতির জন্য তার মন্ত্রণালয় গার্মেন্টস ও ওষুধ খাতের ব্যবসায়ী নেতা এবং বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বলেও জানান তিনি।

সরকার এই আলোচনা প্রক্রিয়ায় বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহী। একইসঙ্গে, বেসরকারি আমদানিকারকদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিনসহ অন্যান্য পণ্য আমদানিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এর আগেও বাণিজ্য ভারসাম্য আনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত এপ্রিলে তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি লিখে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা, গম, এলএনজি ও সয়াবিন আমদানির প্রস্তাব দেন।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও ট্রাম্পের শুল্ক নীতি

পলিটিকোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৫০টির বেশি দেশকে নতুন শুল্ক হার জানিয়ে চিঠি পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেছেন, ছোট দেশগুলোর জন্য শুল্কের হার একই রকম থাকবে, যা চীন বা জাপানের মতো বড় অর্থনীতির দেশগুলোর সঙ্গে হওয়া চুক্তি থেকে ভিন্ন।

বর্তমানে সব দেশকেই এপ্রিল মাসে নির্ধারিত অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, নতুন ভিত্তিগত শুল্ক ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের কাছে এরই মধ্যে নতুন শুল্ক হারের চিঠি পাঠানো হয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশের রপ্তানির একক বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে প্রতিবছর ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়। বিপরীতে, আমদানি হয় ২ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এই বিপুল বাণিজ্য ঘাটতিকেই উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে দেখাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন আমদানির মাধ্যমে এই ঘাটতি কমিয়ে এনে একটি স্বস্তিদায়ক বাণিজ্যিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে বাংলাদেশ। উৎস: ডেইলি স্টার।

 
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়