খালি চোখে চন্দ্রগ্রহণ দেখা সম্পূর্ণ নিরাপদ, কারণ এই সময়ে চাঁদ থেকে কোনো ক্ষতিকর রশ্মি নির্গত হয় না। এটি সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে, যা পূর্ণিমার চাঁদের আলোর মতোই। সূর্যগ্রহণের সময় খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকালে যেমন চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ঝুঁকি নেই।
চাঁদ সূর্যের আলোয় আলোকিত হলেও, সরাসরি সূর্য থেকে আসা আলোর মতো ক্ষতিকর নয়। তাই চন্দ্রগ্রহণ দেখার সময় খালি চোখে তাকালে চোখের কোনো ক্ষতি হয় না। আপনি টেলিস্কোপ বা বাইনোকুলারের সাহায্যেও চন্দ্রগ্রহণ দেখতে পারেন। কারণ, চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ থেকে আসা আলোর তীব্রতা এতটাই কম থাকে যে তা চোখের রেটিনার কোনো ক্ষতি করে না।
প্রসঙ্গত, আজ বিশ্ব এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হবে। এটি ‘ব্লাড মুন’ নামেও পরিচিত। জানা গেছে, আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বাংলাদেশ থেকেও দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। যারা রাতের আকাশ দেখতে ভালোবাসেন এবং মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য দারুণ সুযোগ এটি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যদি আকাশ মেঘমুক্ত থাকে তবে বাংলাদেশ থেকেও এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে।
চন্দ্রগ্রহণটি ৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে শুরু হয়ে পরদিন অর্থাৎ ৮ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত চলবে। মোট ৭ ঘণ্টা ২৭ মিনিট স্থায়ী হবে গ্রহণ। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ২৮ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে।
এ সময় চাঁদ ধীরে ধীরে পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করবে। আংশিক চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে রাত ১০টা ২৬ মিনিটে। রাত ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ, যা চলবে রাত ১২টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত। সর্বাধিক গ্রহণ হবে রাত ১২টা ১১ মিনিটে।
আংশিক গ্রহণ শেষ রাত ১টা ৫৬ মিনিটি ৩১ সেকেন্ডে। রাত ২টা ৫৬ মিনিটে গ্রহণের সমাপ্তি ঘটবে।
চন্দ্রগ্রহণটি পূর্ণাঙ্গভাবে দেখা যাবে এমন স্থান হলো- পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার হিলা দ্বীপ থেকে শুরু করে পশ্চিমে কেনিয়ার মোম্বাসা বন্দর পর্যন্ত। এই দুই প্রান্তের কিছুটা পূর্ব-পশ্চিমেও আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে। তবে উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা থেকে এটি দেখা যাবে না।
বিজ্ঞানিরা জানাচ্ছেন, যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় অবস্থান করে এবং পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে, তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে, এর ফলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। তবে একই সরলরেখায় অবস্থান করলেও, এদের মধ্যে থাকা কৌণিক দূরত্বের ওপর নির্ভর করে গ্রহণ পূর্ণগ্রাস হবে নাকি খণ্ডগ্রাস।