শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ভিসা জটিলতায় স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা, উদ্বেগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও পরিবার ◈ বাংলাদেশের আকাশসীমায় একসঙ্গে ৫টি ড্রোন উড়িয়েছে বিএসএফ, চরম উদ্বেগ সীমান্তে (ভিডিও) ◈ সৌদি আরবে হজ পালনে গিয়ে ১৫ বাংলাদেশির মৃত্যু ◈ বাংলাদেশ সফরে আসছে বিজেপি টিম, নেতৃত্বে শুভেন্দু ◈ যাত্রাবাড়ীতে ট্রাফিক সার্জেন্টের তৎপরতায় ছিনতাইকারী আটক, স্বর্ণের চেইন উদ্ধার ◈ রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে পিএসজি ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ চমক আর পরিবর্তনের মিশেলে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বাছাই দল ◈ জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল রোববার ◈ শিল্প কলকারখানায় আজ থেকেই গ্যাস সরবরাহ বাড়বে: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ জাপান সফর শেষে দেশের উদ্দেশে টোকিও ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২৫, ০৭:১৩ বিকাল
আপডেট : ৩১ মে, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

ঋণনির্ভর বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের

মনজুর এ আজিজ: আগামী সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আসন্ন এ বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে বেশি ঋণ না নিয়ে বিদেশি ঋণের দিকে ঝুঁকছে সরকার। তবে বৈদেশিক ঋণের সুদ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কাকে বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশি ঋণের ভারসাম্য বজায় রাখার তাগিদ দিয়েছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। 

পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, এবার আকার কমিয়ে ধরা সত্ত্বেও আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি উৎস থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যেটা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আছে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও চলতি অর্থ বছরের গত আট মাসে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে ৪.১৩ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২০ টাকা হারে ধরা হলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে এবার ব্যাংক থেকে যতটা কম ঋণ নেওয়া যায়, সে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী বছর ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যা ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাত বছরে এ ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সময়ে সরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। বেসরকারি খাতে তা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের মোট ঋণের ৮৪ বিলিয়ন ডলারই নিয়েছে সরকার। বাকি ১৯ বিলিয়ন ডলার নিয়েছে বেসরকারি খাত।

বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ঋণ নেওয়ার এই গতি অব্যাহত থাকলে অর্থনীতি চাপের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। তাই বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত বাধাগ্রস্ত হয়। আবার বেশি করে বিদেশি ঋণ নিলে সেটা পরিশোধেরও চাপ থাকে। ফলে সামস্টিক অর্থনীতিকে স্বাভাবিক রাখতে হলে দেশি-বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন বিদেশি ঋণ পরিশোধের যে চাপ সেটা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণই বলা যায়। অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের (২০২৪) জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের দেশি-বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩২ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুন শেষে অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২০ হাজার ২০৫ কোটি টাকায়। ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এছাড়া গত বছরের জুন শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৭৭ কোটি টাকায়, চার বছর আগে যার পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চার বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। 

অর্থবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার হতে পারে। এ বাজেট থেকেই ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আগামী অর্থবছরে আড়াই লাখ কোটি টাকার নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি উৎস থেকে এ ঋণ নেওয়া হবে।

বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি অর্থবছরেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশের আশপাশে রাখা হয়। কখনো ৫ শতাংশের একটু বেশি থাকে বাজেটঘাটতি, কখনো বা ৫ শতাংশের কম। তবে আগামী অর্থবছরে বাজেটঘাটতি ৪ দশমিক ২ শতাংশ রাখা হতে পারে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। অর্থবিভাগ মনে করে, আগামী অর্থবছরে বাজেটঘাটতি ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার নিচে থাকলে সাড়ে ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির চাপ ৯ শতাংশের ওপরেই রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়