জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষিতে দেশের পুলিশ অনেকাংশেই নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি দেখা দেয়। বিশেষ করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, সশস্ত্র ডাকাতি ও হামলার ঘটনা এমন মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে পুরো এলাকা এক আতঙ্কপুরিতে পরিণত হয়। এই পরিস্থিতি নজরে আনে কানাডার একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার অ্যালেক্স ক্রাইসেল, যিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মোহাম্মদপুরের রাতের ভয়াবহতা তুলে ধরেন।
অ্যালেক্সের ভিডিও শিরোনাম “On A.M. Slow in Mohammedpur: How Dangerous Is It Really?”। সেখানে তিনি দেখান, রাত একটায় একা মোহাম্মদপুরের গলিপথ ও রাস্তায় ঘুরে এলাকা পরীক্ষা করেছেন। যদিও সরাসরি কোনো হুমকি অনুভব করেননি, অনেকেই তার দিকে কৌতূহলী চোখে তাকিয়েছেন। তিনি সাবধানতার জন্য চেইন ও আংটি খুলে রেখেছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে মোহাম্মদপুরে চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা অপরাধীদের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তবে পুলিশ জানাচ্ছে, সামাজিক মাধ্যম ও ইউটিউবে প্রদর্শিত পরিস্থিতি বাস্তবে এতটা ভয়াবহ নয়। নিয়মিত পেট্রোলিং ও বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে, প্রতিদিন ১৫–২০ জন অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে। আইজিপি বাহারুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন যে, মোহাম্মদপুরে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে, যেখানে সেনাবাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনকেও সহায়তা দিতে হচ্ছে।
অ্যালেক্স ক্রাইসেল শুধু মোহাম্মদপুর নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও পর্যটন স্থানেও ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তার চ্যানেলে আছে “Trying Bangladesh Food,” “Mizan Hotel Roadside Buffet Experience” এবং “Exploring World Famous Bangladesh Forest”। তবে মোহাম্মদপুরের ভিডিও আন্তর্জাতিক দর্শকদের মধ্যে ঢাকার রাতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সংক্ষেপে, মোহাম্মদপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস্তব বিপদজনকতা কতটা তা মূলত নির্ভর করছে পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিভঙ্গির উপর, তবে এলাকার অপরাধ বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।