শিরোনাম
◈ নতুন বিপদের সতর্কতা: প্লেট লকড, জমছে শক্তি—বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প সময়ের ব্যাপার মাত্র ◈ ভূমিকম্পের পর সাগরের বুক চিড়ে যেভাবে জেগে উঠেছিল সেন্টমার্টিন দ্বীপ (ভিডিও) ◈ যেসব এলাকায় শনিবার ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না ◈ হাসিনার আপিল করার সুযোগ আছে: অ্যাটর্নি জেনারেল ◈ হবু স্বামীর মৃত্যুর দেড় বছর পর সন্তানের জন্ম, মাত্র ৯টি শুক্রাণু নিয়ে ইসরাইলি চিকিৎসকের অবিশ্বাস্য সফলতা! ◈ আ. লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কাকে ভোট দিবেন, নানা অলোচনা ◈ উগান্ডাকে হারিয়ে নারী কাবা‌ডি বিশ্বকা‌পের সেমিফাইনালে ভারত ◈ পরিচয় জানা গেল পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত ৩ জনের  ◈ মৃত্যুদণ্ড, নিষেধাজ্ঞা ও পলাতক নেতৃত্ব, নেই অনুশোচনাও—কোন পথে ফিরবে আওয়ামী লীগ? ◈ ঢাকার পুরোনো ভবনগুলোর ৯০ ভাগই বিল্ডিং কোড মানে নাই: রিজওয়ানা হাসান

প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০৫ রাত
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভূমিকম্পের পর সাগরের বুক চিড়ে যেভাবে জেগে উঠেছিল সেন্টমার্টিন দ্বীপ (ভিডিও)

সাইন্স ডাইরেক্ট: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এটির শান্ত বালুকাময় সৈকত আর নীল জলরাশি পর্যটকদের কাছে এক স্বপ্নপুরী। কিন্তু এই নয়নাভিরাম দ্বীপটির জন্মরহস্য লুকিয়ে আছে এক বিশাল প্রাকৃতিক আশ্চর্যের মধ্যে। ভূতত্ত্ববিদদের গবেষণায় জানা গেছে, আজকের এই দ্বীপটি রাতারাতি জেগে উঠেছিল আজ থেকে প্রায় ২৬৩ বছর আগে ১৭৬২ সালে। ওই বছরের ২ এপ্রিলের এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে সৃষ্টি হয়েছিল সেন্টমার্টিনের।

বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট সাইন্স ডাইরেক্টে ‘মাইক্রোঅ্যাটল্‌স ডকুমেন্ট প্রায়র আর্থকোয়েকস  অ্যালং দ্য সাউথ-ইস্ট কোস্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে ভারত ও মিয়ানমার প্লেটের সংযোগস্থলে থাকা বিশাল প্লেটচ্যুতি অঞ্চলে সংঘটিত একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। ঐতিহাসিক নথিপত্র এবং আধুনিক বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এটি ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় ৮ দশমিক ৫ বা তারও বেশি মাত্রার এক প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প, যা ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী কম্পন হিসেবে বিবেচিত। সেই রাতে কম্পন সমগ্র চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অঞ্চলে তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছিল।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রভাবে ভূ-প্রকৃতিতে আমূল পরিবর্তন আসে। সমুদ্রের নিচে থাকা ভূ-প্লেটগুলোর মধ্যে সৃষ্ট প্রচণ্ড চাপের ফলে বঙ্গোপসাগরের তলদেশের একটি বৃহৎ অংশ স্থায়ীভাবে উপরে উঠে আসে। বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাকে 'ভূমিকম্পজনিত সহ-উত্থান' বলে চিহ্নিত করেছেন।

এই উত্থানের ফলেই সেন্টমার্টিন এবং টেকনাফের একটি বিশাল উপকূলীয় অংশ, যা পূর্বে সমুদ্রের নিচে একটি ডুবো চর হিসেবে পরিচিত ছিল, তা সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে স্থায়ী ভূখণ্ড হিসেবে জেগে ওঠে।

এই উত্থানের পরিমাণ ছিল অত্যন্ত বিশাল। আধুনিক ভূতাত্ত্বিক গবেষণা এবং প্রবালের বয়স নির্ণয় (যেমন কার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে) নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সেন্টমার্টিন দ্বীপটি সেই ভয়াল রাতে প্রায় প্রায় ১০ ফুট উপরে উঠে এসেছিল!

এই অবিশ্বাস্য উত্থানের সবচেয়ে বড় ও বাস্তব প্রমাণ হলো দ্বীপে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে উঠে আসা মৃত প্রবালের স্তর। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, এই প্রবালগুলো জীবিত থাকাকালে পানির নিচে ছিল। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণে হঠাৎ উপরে উঠে আসার ফলে মারা যায়। এই স্তরগুলিই প্রমাণ করে যে, ১৭৬২ সালের আগে এই অঞ্চলটি স্থায়ী স্থলভূমি ছিল না।

গবেষকদের মতে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুধুমাত্র সেন্টমার্টিন দ্বীপকে নতুন জীবন দেয়নি; এটি পুরো উপকূলীয় অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছিল। ওই ভূমিকম্পের ফলে ভয়াবহ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসও সৃষ্টি হয়েছিল, যা বিপুল প্রাণহানি ঘটিয়েছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়