ফিরোজ আহম্মেদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনের নাম চূড়ান্ত হওয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে কান ধরে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফরহাদ হোসেন নামে বিএনপির এক কর্মী।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমি কান ধরে রাজনীতি ছাড়ছি। এই আসনে সাইফুল ইসলাম ফিরোজ কিংবা হামিদুল ইসলাম হামিদের মধ্যে যেকোনো একজনের পক্ষে কাজ করতাম। কিন্তু তাদের কাউকেই মনোনয়ন না দিয়ে বহিরাগত কাউকে প্রার্থী করায় আমি বিএনপি ত্যাগ করছি। গত ১৭ বছর যারা কালীগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি ধরে রেখেছে, তাদের মূল্যায়ন না হলে আর রাজনীতি করবো না।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। পরে রাত ২টা ১৬ মিনিটে মোবাইল ফোনে রাশেদ খাঁন নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা দলগুলোর জন্য আরও সাতটি আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। এসব আসনের মধ্যে ঝিনাইদহ-৪ অন্যতম, যা রাশেদ খাঁনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘোষণার পর থেকেই কালীগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার রাত থেকেই কালীগঞ্জ থানা রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়ছে। তারা এ আসনে বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী মনোনয়নের দাবি জানান।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, রাশেদ খাঁন এই নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা নন এবং এখানকার ভোটারও নন। একজন বহিরাগত প্রার্থী চাপিয়ে দেওয়া দলীয় কর্মীদের জন্য অপমানজনক বলে তারা মনে করছেন।
বিএনপির কর্মী তাজু জোয়ারদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “গত ১৭ বছর সাইফুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। এখন একজন বহিরাগতকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যাকে কালীগঞ্জের মানুষ কোনো দুর্দিনে পাশে পায়নি, আমরা এমন কাউকে দলের প্রার্থী হিসেবে চাই না। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা বিএনপির জন্য জীবন বাজি রেখেছি। এই আসনে আমরা দলের নিজস্ব প্রার্থী চাই।