ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ: ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ। সন্ধ্যায় শহরে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করা হয়।
‘গুলির মুখে কথা কবো, আমরা সবাই হাদি হবো’; ‘ হাদি ভাইয়ের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ; ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ প্রভৃতি স্লোগান তুলে বিক্ষোভ করেন মিছিলকারীরা।
সন্ধ্যায় শহরের শাপলা চত্বরে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ’। এতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও এনসিপি নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। সমাবেশে এনসিপি কুড়িগ্রাম জেলা আহ্বায়ক মুকুল মিয়াসহ জেলা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর কিছুক্ষণ পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রশিবির। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে মিছিল বের হয়ে শহর ঘুরে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করেন তারা। জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোবাশ্বের রাশেদীনের নেতৃত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ছাত্র শিবির কুড়িগ্রাম কলেজ শাখা সভাপতি মাহমুদুল হাসান রিফাতসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভকারীরা হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী এবং তাদের পেছনে থাকা ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল: ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে পৃথক মিছিল করেছে 'বীর চট্টলার ছাত্র-জনতা', ইসলামী ছাত্র শিবির, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন। সন্ধ্যায় ‘বীর চট্টলার ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হন শতাধিক তরুণ। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা ওয়াসা মোড়ের দিকে যান।
হাদীর ওপর গুলির প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ।
মিছিলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, চট্টগ্রাম নগরীর সমন্বয়কারী রিদুয়ান হৃদয়সহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ইনকিলাব মঞ্চ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শুরুর আগে নেতারা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তিরা দেশে এখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
এদিকে, রাত ৮টার দিকে নগরীর দেওয়ানহাট মোড় থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখা। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি মাইমুনুল ইসলাম মামুন, চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী শামসুজ্জামান হেলালী প্রমুখ।
একই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করেছে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদল। কলেজ ছাত্রদলের মিছিলটি বিকেলে চট্টগ্রাম কলেজ গেট থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদেক্ষিণ করে।
ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন চাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) মো. ইব্রাহীম রনি, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাঈদ বিন হাবিব।
খুলনায় মশালমিছিল: ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় মশালমিছিল হয়েছে। রাতে মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে আপ বাংলাদেশের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মিছিলের আগে সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন আপ বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক মো. শাকিল আহমেদ, খুলনা জেলার সদস্যসচিব তারিকুল ইসলাম সৌরভ প্রমুখ।
এর আগে বিকেল ৫টার দিকে শিববাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জুলাইয়ের সহযোদ্ধা ও শিক্ষার্থীরা। শিববাড়ি মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে তেঁতুলতলা মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার শিববাড়ি চত্বরে এসে সমবেত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের খুলনার প্রতিনিধি মো. গালিব, আগুয়ান ৭১ এর সদস্য আব্দুল্লাহ চৌধুরী, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মহরম হাসান মাহিম প্রমুখ।
হিলিতে বিএনপির বিক্ষোভ: ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে দিনাজপুরের হিলিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি।
পৌর বিএনপির আয়োজনে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় হিলি বাজারস্থ খাদ্যগুদাম মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন হাদি ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, হাদি ভাইয়ের ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই। হাদির ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই। মিছিলটি হিলি বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা হাদির ঈপর হামলার তীব্র নিন্দা এবং হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ সময় হাকিমপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক ওহেদুর রহমান রিপন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ মিছিল: ওসমান হাদিকে গুলি করার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। রাত ৮টা দিকে শহরের চক বাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি বাজার সড়ক প্রদক্ষিণ করে উত্তর তেমুহনীতে সমাবেশে মিলিত হয়।
এতে বক্তারা বলেন, পরিকল্পিতভাবে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছে। আমরা ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহর শিবির সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক মো. আরমান হোসেন, সদস্যসচিব সায়েদুর রহমান রাফি প্রমুখ।
জয়পুরহাটে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল: ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণ ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি জেলা শাখা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মিছিলে অংশ নেন শতাধিক নেতাকর্মী। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ আহমেদ উল্লাহ শাকিল। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাফি দেওয়ান, জেলা সদস্যসচিব রাহিসুল ইসলামসহ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কবির, যুগ্ম সদস্যসচিব জহুরা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন হাদি প্রমুখ।
ছাত্রশক্তির জেলা আহ্বায়ক বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় জনগণের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হুমকির মুখে পড়বে।
মাদারীপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ: ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে মাদারীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের মুক্ত মঞ্চ থেকে মিছিলটি শুরু হয়।
মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর থানা সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ, জেলা জামায়াত সেক্রেটারি এনায়েত হোসেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুমবিল্লাহ, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশ খান প্রমুখ।
রাজবাড়ীতে মশালমিছিল: ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল হয়েছে।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি মশালমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে রেলগেট, পান্না চত্বর হয়ে শহরের শহীদ স্মৃতি চত্বরের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় হাদির ওপর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, হাদিকে গুলি কর হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। নির্বাচনে হাদির বিজয় নিশ্চিত জেনে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
দিনাজপুরে বিক্ষোভ: সন্ধ্যায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে থানা ফটকে যায়। পরে সেখান থেকে ঘুরে জেলা পরিষদ ডাকবাংলা মোড় হয়ে একাত্তর চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
কুমিল্লায় প্রতিবাদ সমাবেশ: বিকালে কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে ইনকিলাব মঞ্চ, এনসিপি, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তারা প্রশাসনকে সময়সীমা দিয়ে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাদিকে গুলি করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে না পারলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সমাবেশে বক্তব্য দেন কুমিল্লা মহানগর ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক গোলাম সামদানী, এনসিপি কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. রাশেদুল হাসান, এবি পার্টির কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক নাহিয়ান।
ফেনীতে বিক্ষোভ: ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় ফেনীতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে শুক্রবার বাদ মাগরিব শহরের বড় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার ঘুরে খেজুর চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ফেনী জেলা আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব সোহাইমিন তাজিম প্রমুখ।
কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল: সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ছাত্র-জনতা। সরকারি কলেজ মাঠ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মজমপুর ট্রাফিক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাইয়ের অন্যতম শক্তি ওসমান হাদির ওপর হামলা একটি পরিকল্পিত ঘটনা। হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। মাগরিবের নামাজের পর সরকারি কলেজ জামে মসজিদে গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় মোনাজাত করা হয়।
পাশাপাশি কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুষ্টিয়ার কুমারখালী গোলচত্বর এলাকায় সন্ধ্যায় বিক্ষোভের আয়োজন করেন উপজেলার আহত জু্লাই যোদ্ধারা। উপজেলা আহত জুলাই যোদ্ধা কমিটির সভাপতি আমির হামজার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন কুমারখালী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আহত জুলাই যোদ্ধা তরিকুল ইসলাম (রিপন), জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী আহত জু্লাই যোদ্ধা মফিজুর রহমান (শাহিন) প্রমুখ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: ওসমান হাদিকে গুলি করার প্রতিবাদে বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় মদতদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবি জানান। তাদের ভাষ্য, হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়।
বিক্ষোভ শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ঠিক পরের দিন আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই আন্দোলনের অগ্রনায়ক, ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী কণ্ঠস্বরকে আজকে দিনদুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। এই ইন্টেরিম সরকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিচার করতে যে ব্যর্থ হয়েছে, সে ব্যর্থতার একটি নমুনা আজকে আমরা দেখতে পেয়েছি। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ জুলাই জাবি ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাদের নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, রক্তাক্ত করেছিলেন তাঁদের বিচার আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিকালে একটি মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরের তালাইমারিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিক্ষোভকারীরা মিছিলে ‘হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদের অ্যাকশান, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর ফটকে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এতে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়ুবুর রহমান, শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দীন মহসিন, শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অবদুল্লাহ আল নোমান। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। শুক্রবার মাগরিবের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে ওসমান হাদির ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে হবে। এটা আগামী নির্বাচনসহ সামগ্রিকভাবে দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্ন। এ জন্য সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় : বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।মিছিলটি ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া সড়ক, বিজয় সড়ক ও দেবদারু সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় তারা ‘হাদি ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘সন্ত্রাস রাজনীতি একসাথে চলে না’, ‘হাদির ওপর হামলা কেন? ইন্টেরিম জবাব চাই’–সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।