ইফতেখার আলম বিশাল: রাজশাহী মহানগরীর পবা থানায় আলোচিত বিউটি বেগম হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে মাত্র ৭২ ঘণ্টায়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামির একজন মো. তারা মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন—পবা থানার বাগসারা গ্রামের মো. তারা মিয়া (৩৩), মহানন্দাখালী এলাকার মো. ফারুক হোসেন (৩০) এবং পিল্লাপাড়ার মো. হেলাল উদ্দিন (২৩)। তারা মিয়ার পিতা মো. আব্দুল বারেক, ফারুকের পিতা মো. ইছুল মণ্ডল এবং হেলালের পিতা মৃত এন্তাজ আলী।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (শাহমখদুম) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পবা থানা পুলিশ ও মহানগর ডিবির যৌথ অভিযানে দ্রুত সময়ের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২০ অক্টোবর রাত ১২টা ২০ মিনিটে বোয়ালিয়া থানার সোনাদিঘীর মোড় এলাকা থেকে প্রথমে তারা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে ধারাবাহিক অভিযানে মহানন্দাখালী থেকে ফারুক হোসেন এবং পিল্লাপাড়া থেকে হেলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে মো. তারা মিয়া স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন এবং অপর দুই সহযোগীর নামও প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, তারা মিয়ার জবানবন্দি অনুযায়ী, নিহত বিউটি বেগম টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে একবারের জন্য বিউটি বেগমের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়। তবে চুক্তি অনুযায়ী অর্থ না দিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে ধানের জমিতে মরদেহ ফেলে রাখা হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অপর দুই আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
নিহতের ছেলে মো. মিলন প্রাং পবা থানায় দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করেন, তার মা বিউটি বেগম প্রায় ১৫ বছর আগে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজশাহীর আলাইবিদিরপুর গ্রামে ভাড়া থাকতেন এবং স্থানীয় একটি হোটেলে কাজ করতেন। প্রায় দুই বছর আগে তিনি গাইবান্ধার মো. রাশেদ নামের এক ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন।
১৮ অক্টোবর সকালে দ্বিতীয় স্বামী রাশেদ ফোনে মিলনকে জানান যে, বিউটি বেগমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মিলন পরে মায়ের বাসায় গিয়ে তা তালাবদ্ধ অবস্থায় পান। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারেন, কয়েকদিন ধরে ঘরটি বন্ধ রয়েছে।
এরপর তিনি খবর পান যে পবা থানার বাগসারা এলাকায় একটি অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত নারীর কোমরে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে মিলন নিশ্চিত হন, মৃত নারী তার মা বিউটি বেগম।