ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের চন্দ্রনগর জামে মসজিদ থেকে ঈশ্বরপুর-উচাখিলা সংযোগ সড়কের প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। গত পাঁচ বছরে পাঁচবার লিখিতভাবে আবেদন করা হলেও এখনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম আবেদনটি করা হয়েছিল তৎকালীন ইউএনও জাকির হোসেনের কাছে। পরবর্তীতে ইউএনও মিতু মরিয়ম, হাফিজা জেসমিন ও শারমিনা সাত্তারের সময়েও একই আবেদন জমা দেওয়া হয়। সর্বশেষ সাবেক ইউএনও এরশাদুল আহমেদের কাছে পুরোনো আবেদনসংযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগ জমা দেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ইউএনও বদলি হওয়ায় প্রকল্পটি আর এগোয়নি বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলী ফকিরকেও বিষয়টি একাধিকবার জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাস্তাটির দুই পাশে মাটি কেটে যাওয়ায় এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্ষাকালে এটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর শুকনো মৌসুমে ধুলার কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদের। রেকর্ড অনুযায়ী রাস্তার প্রস্থ যেখানে ২০ লিংক থাকার কথা, বাস্তবে তা ৮-৯ লিংকে এসে ঠেকেছে।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। ভাঙাচোরা, কর্দমাক্ত রাস্তায় তারা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, “চারবার আবেদন করেছি, লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। প্রশাসন শুধু কাগজপত্র নেয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ।”
অটোরিকশা চালক বাবুল মিয়া বলেন, “বর্ষায় গাড়ি চালানো খুবই কষ্টকর। রোগী বা যাত্রী থাকলে যাওয়ার সাহসই হয় না।”
এছাড়া, স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ মোস্তাকিম বলেন, “রাস্তাটি কারো জন্যই উপযোগী নয়। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে জরুরি সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের সার্ভেয়ার নুরুদ্দীন বলেন, “ ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এটি চলাচলের অযোগ্য। প্রাথমিকভাবে ইট দিয়ে সলিং করতে আনুমানিক ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার মতো ব্যয় ধরা হয়েছিল, এবং ইউএনও স্যারও এই বিষয়ে অবগত ছিলো এবং আশ্বস্ত করেছিল, তবে তখন স্যারের নির্দেশ এবং বাজেট পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা সম্ভব হতো কিন্তু উনি বদলি হবার কারণে আবারও কাজটি আটকে আছে।
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সানজিদা রহমান বলেন- জুন মাস শেষ হওয়ার কারণে এই মুহূর্তে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব নয়। তবে, নতুন বাজেটে এই রাস্তা সংস্কারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিবেচনা করবো।