নাজমুল হক মুন্না, উজিরপুর (বরিশাল): বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জয়শ্রী গ্রামে যৌতুক না পেয়ে নিজের নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন এক পাষণ্ড স্বামী—এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী নারী রোজিনা বেগম (৩০) উপজেলার হস্তিশুণ্ড গ্রামের মৃত হাকিম মৃধার মেয়ে। তিনি সামাজিকভাবে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন জয়শ্রী গ্রামের মনজুর আলম সরদার (৪৪)-এর সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী মনজুর আলম স্ত্রীর ওপর শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন বলে জানান রোজিনার স্বজনরা।
তারা আরও জানান, তিন মাস আগে গৌরনদীর একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে রোজিনা একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু তার স্বামী মনজুর আলম দাবি করেন, সন্তানটি কন্যা এবং অসুস্থ অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। রোজিনা সন্তানকে দেখতে চাইলে স্বামী জানান, মৃত সন্তানকে হাসপাতালে রেখেই ফেলে এসেছেন।
পরবর্তীতে রোজিনা জানতে পারেন, তাদের ছেলে সন্তান জীবিত এবং আড়াই লাখ টাকায় এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন মনজুর আলম। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে গত ৩০ জুন (সোমবার) সন্ধ্যায় স্বামী পুনরায় বাবার বাড়ির জমি বিক্রি করে টাকা আনার জন্য চাপ দেয়। রোজিনা অপারগতা জানালে স্বামী তাকে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রাখে এবং তার গয়নাগাটি, মোবাইল ও বাকি সন্তানদের আটকে রেখে ঘর থেকে বের করে দেয়।
পরবর্তীতে প্রতিবেশীদের সহায়তায় স্বজনরা রোজিনাকে উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে মনজুর আলম বলেন, "আমি কোনো মারধর করিনি, বরং ও (স্ত্রী) আমাকে মারধর করেছে। আর বাচ্চা বিক্রির অভিযোগে আমি দায়ী নই, কারণ আমি কোনো হাসপাতালের কাগজে সই করিনি।"
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস সালাম বলেন, “ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”