আইরিন হক, বেনাপোল(যশোর): যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পথে ভারতে কোরবানির পশুর চামড়া পাচার ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২১ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনস্ত সব সীমান্তেও একই সতর্কতা থাকবে বলে জানা গেছে। বিজিবির পাশাপাশি পুলিশও চামড়া পাচার রোধে কাজ করবে বলে জানা গেছে।
কোরবানি ঈদের দিন থেকে যতদিন পর্যন্ত পাচারের সম্ভবনা থাকবে ততদিন পর্যন্ত বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে বলে সংশিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারও পশুর চামড়ার দাম কম। গতবার কেনা দামেও ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে পারেনি। সরকারি দামেও সাড়া মেলেনি। অপর দিকে ভারতে চামড়ার দাম বেশি হওয়া পাচারের শঙ্কা থেকে যায়। এতে বিজিবি প্রতিবছরই পাচারের ঝুকি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেয়।
স্থানীয় চামড়া বিক্রেতা রফিক মিয়া জানান, পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া বর্তমানে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ছাগলের চামড়ার বড়টার দাম প্রতি পিস ৪০ টাকা ছোট ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ রুপি এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া প্রতি পিস ৭০০ থেকে এক হাজার রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
বেনাপোল লতিফা ইয়াসিন এতিম খানার শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, এলাকার মানুষ তাদের কোরবানির পশুর চামড়া দান করে থাকেন। কিন্তু এবার চামড়ার দাম খুবই কম।
কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, চামড়া আমাদের দেশের সম্পদ। এই সম্পদ যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতে পাচার না হয়, এজন্য বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ঈদের দিন সকাল থেকেই বাড়তি নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে যেসব বিজিবির পোস্ট ও ক্যাম্প রয়েছে, সেগুলোতে এ বিষয়ে বাড়তি নজরদারি রাখা হবে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপরাধ রুখতে বিজিবি সবসময় সীমান্তে সোচ্চার রয়েছে জানান তিনি।
বেনাপোলের যেসব সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের ঝুকি থাকে সেগুলো হলো—বেনাপোল, গাতীপাড়া, সাদিপুর, রঘুনাথপুর, ঘিবা, ধান্যখোলা, কাশিপুর, শিকারপুর, শালকোনা, আন্দুলিয়া, হিজলী, মাসিলা, শাহজাতপুর, বর্ণি, দৌলতপুর, পুটখালী, গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, পাঁচভূলট ও রুদ্রপুর সীমান্ত।
বেনপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রাসেল মিয়া জানান, বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কারা কোরবানি পশুর চামড়া পাচার করতে পারে সন্দেহ ভাজনদের তালিকা করে তাদের উপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।