শিরোনাম
◈ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা এখনও আসেনি, সরকারের নির্দেশনা পেলেই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী (ভিডিও) ◈ গ্যাস নিরাপত্তা ও পরিবেশ উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ৬৪০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা ◈ আমরা পারব, ইনশাআল্লাহ—জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্টের আশা ও প্রত্যয় ◈ ৫ আগস্ট ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’, থাকবে সরকারি ছুটি : উপদেষ্টা ফারুকী (ভিডিও) ◈ ক্লাব বিশ্বকা‌পে ম‌্যান‌চেস্টার সিটির শুভ সূচনা,  লুইসের লাল কার্ড ◈ আদালত থেকে নাটকীয়ভাবে পালাল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ◈ ফাত্তাহ-২ থেকে হোভেইজেহ: ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কৌশলে বিপর্যস্ত ইসরায়েল ◈ আমার একটু ভালোবাসা পেলে কান্না পায় : জাহিদ হাসান ◈ পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, যা জানাগেল ◈ সচিবালয়ে কর্মচারীদের মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি, গণসংযোগের প্রস্তুতি

প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২৫, ১২:৫৭ দুপুর
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

“দুর্ভোগের আরেক নাম পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স”

মাহবুব সৈয়দ,পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি : নরসিংদীর পলাশ উপজেলার অধিকাংশ গরীব রোগীর একমাত্র চিকিৎস সেবার স্থান পলাশ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আবাসিক ভাবে ৩১ শয্যা হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় রুপান্তিত করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল ও অব্যবস্থাপনার কারণে ভেঙে পড়ছে এর চিকিৎসা সেবার মান। ফলে দিনে দিনে কমতে শুরু করেছে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা। বাধ্য হয়ে যে কয়জন রোগী আসেন, তারাও চিকিৎসাসেবা নিতে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনার মধ্যে।

অভিযোগ রয়েছে,দায়িত্বরত অধিকাংশ ডাক্তারই প্রাইভেট মেডিকেলের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত। ফলে তাদের কাজের কাজ শুধু আসা-যাওয়াতেই। মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ও কয়েকজন নার্স দিয়ে চলে চিকিৎসা কার্যক্রম।

একাধিকবার সকাল ১২ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট রোগীদের সেবা দিচ্ছেন আর সকল রুমের দরজা খোলা থাকলেও টেবিল চেয়ারগুলো খালি পড়ে রয়েছে। বেশকিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করেও কোনো ডাক্তারের সন্ধান পাওয়া গেল না। এমন দৃশ্য দেখে এক কর্মচারীকে ডাক্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সবাই চলে গেছেন। সব সময়ই কি ডাক্তাররা আগে চলে যায় কি না জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, স্যাররা তো অন্যত্র আরও রোগী দেখে, তাই চলে যায়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ নন্দা সেন গুপ্তার রুমে গিয়ে দরজা খোলা থাকলেও তাকে তার চেয়ারে পাওয়া যায়নি। পাশের রুমের এক কর্মচারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার একটা জরুরি কাজে ঢাকায় গেছেন। এছাড়া পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা গুলো খালি পড়ে আছে। নার্সদের কাছে রোগীর বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আজ (বুধবার) হাসপাতালে মহিলা রোগী ৬ জন এবং পুরুষ রোগী ৮জন রয়েছে। এভাবেই চলছে উপজেলার সবচেয়ে বড় এই সরকারি হাসপাতালটি। ভুক্তভোগী কয়েকজন
রোগী অভিযোগ করে বলেন, প্রয়োজনের সময় কোনো ডাক্তার পাওয়া যায় না, বড় বড় ডাক্তাররা প্রাইভেট মেডিক্যালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য ব্যস্ত। ছোটখাটো সমস্যা হলেও জেলা হাসপাতাল বা প্রাইভেট হাসপাতালে প্রেরণ করার কথা বলেন। প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ছাড়া এখান থেকে কিছুই পাচ্ছেন না রোগীরা। সব ওষুধ বাহির থেকে কিনে আনতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ ডাক্তার প্রাইভেট হাসপাতাল কিংবা নিজ বাসভবনে চেম্বার খুলে বসেছেন। অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার প্রতিনিয়ত হাসপাতালে থাকার কথা থাকলেও সপ্তাহে দু’একদিন করে দু’এক ঘণ্টা থাকা ছাড়া বাকি সময়ই প্রাইভেট মেডিকেলে রোগী দেখেন। স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল, আব্দুল রহমানসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, আগে হাসপাতালের চিকিৎসার মান অনেক ভালো
ছিল। রোগীরাও অনেক সেবা পেয়েছে এখান থেকে। হাসপাতালের সামনের ব্যবসায়ীরা অনেক জমজমাট ছিল বেচাকেনায়। কিন্তু ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার হিসেবে ডাঃ নন্দা সেন গুপ্তা যোগদান করার পর থেকেই হাসপাতালটিতে দায়িত্ব অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় ধীরে ধীরে এর সেবার মান কমে গেছে। অন্য ডাক্তাররা এখানে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কি না, এটি দেখা সহ হাসপাতালের সেবার মান সার্বিক উন্নয়নের দায়িত্ব যার ওপর সেই ডাঃ নন্দা সেন গুপ্তা নিজেই নিয়মিত অফিস করেন না। তিনি অধিকাংশ
সময়ই ওনার নামে বরাদ্ধকৃত সরকারি গাড়িটি নিয়ে ঢাকায় চলে যান। ফলে দিন দিন এই হাসপাতালটি একটি ভূতরে ঘরে পরিণত হচ্ছে। আব্দুল রহিম ভূইয়া নামে সেবা নিতে আসা এক স্বজন বলেন, আমার ভাইকে নিয়ে টানা তিন দিন এ হাসপাতালে পড়ে ছিলাম। এর মধ্যে একেক বার এক পলকের জন্য ডাক্তাররা এসে দেখে গেলেও কোনো সেবাই দেয়নি তারা। দুদিন পর এক ডাক্তার ভাইকে দেখে কয়েকটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলেও এ গুলো ওনার দেখানো হাসপাতাল ছাড়া অন্য হাসপাতাল থেকে কেনো করিয়েছি, তা নিয়েও আমাদের সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করেছে। এক
পর্যায়ে আমরা এ হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে চলে গেছি।

এছাড়া হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্যাস সংকট। এখানে গ্যাস সংযোগ না থাকায় রোগীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গরম পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। রোগীরা অনেক সময় আশপাশের বাড়ি বা চায়ের দোকান থেকে গরম পানি সংগ্রহ করে আনেন। লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে করতে হাসপাতালের অধিকাংশ কালো ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডাঃ নন্দা সেন গুপ্তার ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়