জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা: [২] পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, হাউজিং কোম্পানীসহ পর্যটনমুখী বিনিয়োগকারীদের ক্রয়কৃত জমি ভরাটে বালু মাটির চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুন। এসব বিনিয়োগকারীদের নিচু জমি উচু করণ, পৌর এলাকার সড়ক ও আবাসিক হোটেল মোটেল নির্মাণে বালুর ব্যবহার বেড়েছে। এসব বালুর চাহিদা পুরণ করতে গিয়ে পৌর এলাকার সমতল ও কৃষি জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করছে জমির মালিকরা।
[৩] অভিযোগ রয়েছে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে পার্শবর্তী কৃষি ও সমতল জমির মাটি ভেঙ্গে পরছে। এতে কৃষি ও সমতল জমি হারিয়ে কুয়াকাটা পৌর এলাকা দিঘির শহরে পরিনত হচ্ছে। জমির ভারসাম্য হারিয়ে পরিবেশের উপর মারাক্তক প্রভাব পরছে এমন দাবী পর্যটন প্রেমীদের। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ নিষিদ্ধ থাকলেও কুয়াকাটা পৌর এলাকার চিত্র ভিন্ন। স্থানীয়দের দাবী বালু উত্তোলনের কারণে কুয়াকাটা পৌর এলাকায় ৫০ টির বেশি বড় বড় পুকুর এবং দিঘি তৈরী হয়েছে। যা পর্যটন বির্নিমাণে বড় হুমকী হয়ে দাড়াতে পারে। জমি বিক্রির চেয়ে বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করায় লাভবান হচ্ছে জমির মালিকরা। এ কারনেই কৃষি ও সমতল থেকে বালু বিক্রির হিরিক পরেছে এমন দাবী এলাকাবাসীর।
[৪] কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের হোসেন পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটার মুসুল্লীয়াবাদ থেকে মহিবুল্লাহ নামক এক ব্যক্তি বিরোধীয় জমি থেকে গত ১ বছর ধরে বড় বড় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করে আসছে। আর এ বালু উত্তোলণে বিশালাকৃতির দিঘি তৈরী হয়েছে।
[৫] তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মহিবুল্লাহ দুইটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ করে কুয়াকাটা বেরীবাধঁ সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করছে। এতে তাদের পার্শবর্তী জমি ভেঙ্গে পড়ছে। কৃষি জমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কমে যাচ্ছে সমতল ভূমি। এতে তারা বাধা দিলে মহিবুল্লাহ তাদের মামলা সহ প্রশাসনিক ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এ বিষয় জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করা হলেও তারা এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
[৬] স্থানীয় বাসিন্দা ও পার্শবর্তী জমির মালিক নুরুল হক বলেন, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ও কৃষি কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলণ করলেও কেউ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
[৭] স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জালাল আহম্মেদ জানান, সড়কের পাশ ঘেষে বালু কেটে দিঘি তৈরী করা হয়েছে। এতে সড়ক ভেঙ্গে পড়ছে। এর প্রতিবাদ করলে মহিবুল্লাহ তাকে জানান, এই বালু উত্তোলনের সাথে উপজেলা প্রশাসন জরিত রয়েছে। এলজিইডির সড়ক নির্মাণ কাজে এ বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। বাধা দিতে আসলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকী দেয়া হয়।
[৮] এ বিষয় মহিবুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় ভূমি প্রশাসন বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানে। তাদের সম্মতিতেই এই বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে।
[৯] এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জরিত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে বালু খেকো একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তার দাবী উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৌশিক আহম্মেদকে পাঠিয়ে বালু উত্তোলণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে বালু উত্তোলনের সাথে জরিত মহিবুল্লাহ পালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। শীঘ্রই আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছেন তিনি। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :