চট্টগ্রাম প্রতিদিন থেকে নেওয়া : বিতর্কিত মন্তব্য আর কল রেকর্ড ফাঁসের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অসন্তোষ’ বুঝতে পেরে ঢাকার বাসভবন থেকে সকালেই চট্টগ্রামের পথ ধরেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা থেকেই তিনি অবস্থান করছেন চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামপাড়ার পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে। সেখানকার বিলাসবহুল কক্ষে শুয়ে শুয়েই শুনলেন মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতির জন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর আদেশ’ পাওয়ার কড়া বার্তা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লুতে আসেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিতর্কিত এই প্রতিমন্ত্রী। সন্ধ্যায় যখন প্রধানমন্ত্রীর আদেশের বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত হয়, তখনও ডা. মুরাদ হাসান চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লুতেই ছিলেন। ঢাকা থেকে একা এসে রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে উঠেছেন ডাবল বেডের বিলাসী কক্ষে। রাত ২টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছিলেন তিনি।
চট্টগ্রামে ডা. মুরাদ হাসানের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই পুরো সময়ে প্রতিমন্ত্রী মুরাদকে অনেকটাই নির্বিকার দেখা গেছে। চট্টগ্রামে কোনো এক বন্ধুর বাসায় যাওয়ার কথাও রয়েছে তার।
তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া আরেক খবরে জানা গেছে, রাতে হোটেল রেডিসন ব্লুতে থেকে সকালে বন্ধুর বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল প্রতিমন্ত্রীর। তবে বিভিন্ন কারণে রাতেই সেখান তাকে সরে যেতে বলা হয় সংশ্লিষ্ট একটি মহল থেকে।
জানা গেছে, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে অশালীন কলরেকর্ড ফাঁসের পর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরেও যাননি প্রতিমন্ত্রী মুরাদ।
১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে এক ফেসবুক লাইভে (সরাসরিতে) যুক্ত হন মুরাদ হাসান। ‘নাহি ড্রেইনস’ নামের এক ফেসবুকারের সঙ্গে লাইভের এক পর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ও পরিবার নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
একই টকশোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রোকেয়া হলের ছাত্র নেত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি। এরপর তার সমালোচনায় মুখর হন বিভিন্ন মহলের লোকজন। এছাড়া তার পদত্যাগেরও দাবি ওঠে। নারীনেত্রীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের মধ্য থেকেও উঠে পদত্যাগের দাবি। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় মুরাদ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি এসব বক্তব্য দিয়ে কোন ভুল করেননি। এগুলো তিনি প্রত্যাহারও করবেন না কিংবা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে সরকার ও দলের ওপর থেকে কোন চাপও নেই।