শিরোনাম
◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে?

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ০১:১১ রাত
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ০১:১১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই, হরহামেশা ঘোরাঘুরি করছে মানুষ

নিউজ ডেস্ক: পাড়া কিংবা মহল্লা, হাসপাতাল, গণপরিবহন, বিপণিবিতান কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে হরহামেশা ঘোরাঘুরি করছে মানুষ। সুযোগ পেলেই চায়ের দোকানে আগের মতো জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে নেই কোনো সচেতনতা। মানবজমিন

বাইরের দেশগুলোতে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হলেও দেশে তরুণ কিংবা বয়স্ক, শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত কেউই সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছেন না। রাজধানীর অলি-গলি, হাসপাতাল, শপিংমলসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি উধাও। বাসে দু-একজন ছাড়া প্রায় যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। পরিবহন শ্রমিকদের বেশির ভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। জীবাণুনাশকের ব্যবহারও দেখা যায়নি। হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠছে যাত্রীরা। হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি ও সচেতনতা। একসঙ্গে গাদাগাদি করে হাসপাতালে প্রবেশ করছেন। রাত হলে হাসপাতালের মেঝেতে পাশাপাশি ঘুমাচ্ছেন। চায়ের দোকান ও শপিংমলগুলোর চিত্র আরও ভয়াবহ। করোনার শুরু থেকে সব জায়গায় মুখে মাস্ক ব্যবহার এবং হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানি ও জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। যাত্রা শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা ও জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছিল। বিভিন্ন হাসপাতাল ও শপিংমলের প্রবেশ মুখে জীবানণুনাশক টানেল বসালেও এখন তা নেই। দু-একটা থাকলেও ব্যবহার অযোগ্য।

বিভিন্ন কাঁচাবাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, সেই করোনা শুরুর আগের চিত্র। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কেনাকাটা করছেন। রাত ১২টায় মিরপুর থেকে আসা বিহঙ্গ পরিবহনে দেখা যায়, বাসের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ জন। যাত্রী তাদের দু-একজন ছাড়া চালক-হেলপারসহ কারও মুখে মাস্ক নেই। অনেকের মাস্ক পরায় অনীহা তৈরি হয়েছে।

বাসে আসন সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। মাস্ক মুখে দিলে আনেকের হাঁসফাঁস লাগে। কেউ আবার গলায় ঝুলিয়ে, আবার কেউ নাকের নিচে মাস্ক রেখে ঘুরছেন। কেউ পকেটে রেখে দিয়েছেন। অনেকে মুখে মাস্ক পরাই ছেড়ে দিয়েছেন। বেশির ভাগ লোকজনেরই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে লোকজন চরম উদাসীন। করোনার নতুন ধরন শনাক্তের ব্যাপারেও অনেকের অজানা।

৫৬ বছর বয়সী বেল্লাল বলেন, মুখে মাস্ক পরলে হাঁসফাঁস লাগে। আগে করোনা ছিল মাস্ক পরতাম, এখন করোনা নেই মাস্ক একদমই পরি না। সারাদিন কাজ করতে হয়। মাস্ক পরলে খুব খারাপ লাগে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

মুগদা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে এসেছেন হাসনা বেগম। তিনি হাসপাতালের মেঝেতে সঙ্গে আরও কয়েকজন স্বজন নিয়ে আছেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। পাশে অন্য রোগীর স্বজনরাও আছেন। তাদেরও নেই কোনো সচেতনতা। হাসনা বলেন, মুখে মাস্ক রাখতে এখন আর ভালো লাগে না। আগে বাসার বাইরে বের হলেই মাস্ক পরতাম। এখন বিরক্ত লাগে। আবার নাকি করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে শুনেছি। আমাদের কিছুই হবে না।

বাস চালক রাকিব বলেন, আগে তো করোনার ভয়ের চেয়ে পুলিশের ভয় বেশি ছিল। মাস্ক না পরলেই জরিমানা দিতে হতো। এখন কেউ কিছু বলে না।

বিথি আক্তার বলেন, আগে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলতাম। এখন মাঝে মাঝে মাস্ক পরি। তবে সবসময় মাস্ক কাছে রাখি। এখন তো দেখি কোথাও কোনো স্বাস্থ্যবিধি ও সচেতনতা নেই। বাস, শপিংমলে জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকার কথা। কিন্তু কোথাও এই ধরনের কিছুই দেখি না। থাকলেও কার্যকর নেই।

মিরপুর থেকে শপিংমলে আসা ক্রেতা নাজমুল বলেন, মাস্ক পকেটে রেখে দিয়েছি। আশপাশে অনেকেইতো মাস্ক পরেনি। করোনা এখন আর আমাদের দেশে নেই। নতুন-পুরান যাই আসুক আমাদের কিছু হবে না।

শাহবাগ মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন সাদিয়া। মুখে মাস্ক পরা। তিনি বলেন, সদরঘাটে যাবেন। করোনা শুরু থেকে মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হই না। গত দুই মাসে মাস্ক একটু কম পরতাম। তবে সঙ্গে রাখতাম সবসময়। কিন্তু এখন আবার পরা শুরু করেছি। শুনলাম অন্য দেশে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। এই জন্য ঝুঁকি জেনে আগে থেকেই সতর্ক হয়েছি।

মুগদা এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, এই এলাকায় করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। পাশেই করোনা হাসপাতাল। কী পরিমাণ রোগী আসছে এবং মারা গিয়েছে তাতো চোখের সামনে দেখেছি। আমিও করোনা শুরুর দিকে আক্রান্ত হয়েছিলাম। ২০ দিন হাসপাতালের বিছানায় ছিলাম। করোনাভাইরাস এখনও কমে যায়নি। ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। প্রথম দিকে মানুষের মাঝে সচেতনতা দেখা গেলেও এখন এলাকার লোকজন এ ব্যাপারে একেবারে উদাসীন। হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ মাস্ক পরে। তবে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সচেতন-অসচেতন কেউই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে না। সবই করোনার আগের মতো চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়