স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে বাজারে এল জ’মাপেল কিলিয়ান। আত্মজীবনীমূলক এই কমিকসে নিজের বেড়ে ওঠার গল্প বলেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ‘আমার নাম কিলিয়ান’—নামের এ বইটির বেশ কিছু পৃষ্ঠা এর মাঝেই দেখে ফেলেছেন ফুটবল–ভক্তরা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কালই বাজারে এসেছে জ’মাপেল কিলিয়ান। প্যারিসে বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসে নিজের সম্পর্কে আরেকটি তথ্যও জানিয়েছেন এমবাপ্পে। প্রথম আলো
১৪ বছর বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমি দেখতে গিয়েছিলেন এমবাপ্পে। কিশোর এই প্রতিভাকে রিয়াল ওই বয়সেই পেতে চেয়েছিল। রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমি ভালদেবেবাসে থাকার পুরো সময়টা নাকি কলা খেয়ে কাটিয়েছেন এমবাপ্পে।
বড় তারকাদের দলে টানা অনেক ঝক্কির কাজ। বর্তমান ক্লাবকে দলবদলের অঙ্ক দিতে হয়। খেলোয়াড় এজেন্ট ও খেলোয়াড়কে বেশ বড় অঙ্কের বোনাস দিতে হয়, আর দলের অন্য তারকাদের সঙ্গে কীভাবে তাঁরা মানিয়ে নেবেন, সেসব ভাবতে হয়। এর চেয়ে তরুণ অবস্থায় প্রতিভাবান খেলোয়াড় টেনে আনাটাই সুবিধাজনক। ১৫ বছর বয়সী মার্টিন ওডেগার্ড যেমন ইউরোপজুড়ে বহু একাডেমি ঘুরে পরে রিয়ালে থিতু হয়েছিলেন।
১৪ বছর বয়সে নেইমারও এভাবে ট্রায়াল দিয়েছিলেন মাদ্রিদের ক্লাবে। দুই সপ্তাহের ট্রায়াল শেষে নেইমারকে পেতেও চেয়েছিল রিয়াল। কিন্তু তাঁর বাবা আর্থিক চাহিদা পূরণ না করায় আর রিয়ালে যাওয়া হয়নি নেইমারের। নেইমারের মতোই এমবাপ্পেকেও ১৪ বছর বয়সে নিজেদের একাডেমি ঘুরিয়ে দেখিয়েছিল রিয়াল। তবে এমবাপ্পের ক্ষেত্রে রিয়াল কতটা আগ্রহী ছিল সেটা টের পাওয়া গেছে অন্যভাবে। এই কিশোরকে রাজি করতে তাঁর দুই আদর্শ জিনেদিন জিদান ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ব্যবহার করেছিল রিয়াল।
নিজের কমিকসে জীবনের সে অধ্যায় নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত এমবাপ্পে। কমিকস আঁকিয়ে ফারোর সঙ্গে ২৩৩ পৃষ্ঠার এই কমিকসে বেশ কয়েকবারই রিয়াল মাদ্রিদের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। শৈশবে মায়ের কাছ থেকে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি উপহার পাওয়া, আরেক জন্মদিনে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর প্রতিকৃতি উপহার পাওয়ার কথাও এই কমিকসে আছে। স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যাওয়ার স্বপ্ন যে ছোটবেলা থেকেই দেখছেন, সেটা কমিকসে একটু পরপরই টের পাইয়েছেন।
তবে তাঁর বইয়ে সবচেয়ে উল্লেখজনক অংশটা ১৪ বছর বয়সে রোনালদো-জিদানের দেখা পাওয়ার গল্প। স্বপ্নের তারকাদের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গটি বেশ কয়েক পৃষ্ঠাজুড়ে দেওয়া হয়েছে। কাল প্রকাশনা অনুষ্ঠানেও উঠে এসেছে সে প্রসঙ্গ। দ্য প্যারিসিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার বয়স যখন ১৪ তখন জিদান আমাকে মাদ্রিদে কিছু সময় কাটানোর নিমন্ত্রণ পাঠান। ওই বয়সের এক বাচ্চার জন্য এটা একটা স্বপ্ন, অসাধারণ কিছু। একটা দেশের, একটা গোটা প্রজন্মের আদর্শ ছিলেন জিদান, আদর্শ থাকবেন তিনি। ১৪ বছর বয়সে আপনি তো কেউ না, সেই আমাকে যখন তিনি এভাবে সম্বোধন করবেন, সেটা জীবনের সেরা মুহূর্ত। এটা অনন্য কিছু। আমার এখনো সে ঘটনার সবকিছু মনে আছে, এতটাই চমকে দেওয়া ঘটনা।’
এমবাপ্পের ভালদেবেবাস-যাত্রার গল্পটা অবশ্য সবারই জানা। জিদান নিজে গাড়িতে করে এমবাপ্পেকে নিয়ে গিয়েছিলেন রিয়ালের একাডেমিতে। সে প্রসঙ্গটা কাল আবার উঠে এসেছে, ‘মাদ্রিদে থাকার সময়ে আমার সবচেয়ে মজার ঘটনা? ও, হ্যাঁ। পুরো সপ্তাহ আমি কলা খেয়েছি। আমি খুব ভয়ে ছিলাম। বন্ডির একটা ছেলেকে জিদান তাঁর গাড়িতে চড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে কথা বলব। আমার প্রথমেই যেটা মনে হয়েছিল...সেটা খুব ভালো একটা মুহূর্ত। আমি কি জুতা খোলার প্রস্তাব দিয়েছি? হ্যাঁ, গাড়ির ভেতরে। কিন্তু আমি আর বেশি কিছু বলব না, তাহলে আর কেউ বই পড়বে না।’
আপনার মতামত লিখুন :