শিরোনাম
◈ কঠিন সমীকরণের সামনে বাংলাদেশ সুপার ফোরে যেতে ◈ গত অর্থবছরে ব্যয় সংকোচনে সরকারের ৫৬৮৯ কোটি টাকা সাশ্রয় ◈ মানুষের জন্ম হয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য: প্রধান উপদেষ্টা ◈ যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ কমাতে চায় সরকার ◈ ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ ◈ মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা আসছে আজ ◈ চীনা দূতাবাস কর্মকর্তাদের দক্ষিণ এশিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ, ভারতকে সতর্ক থাকার আহ্বান তিব্বতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাংয়ের ◈ সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, সেই ফারিয়াসহ তিনজন কারাগারে ◈ ক্যালিফোর্নিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে তামাকের মতো সতর্কবার্তা প্রদর্শনের বিল অনুমোদন ◈ লন্ডনে এক লাখেরও বেশি মানুষের অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ, পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে আহত ২৬ কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর, ২০২১, ০৯:৫৩ সকাল
আপডেট : ০৮ অক্টোবর, ২০২১, ০৯:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] আইপিএল ঘিরে রাণীশংকৈলে জমজমাট জুয়ার আসর

আনোয়ার হোসেন: [২] ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে ঘিরে রাণীশংকৈল উপজেলার সর্বত্র শুরু হয়েছে জমজমাট জুয়ার আড্ডা। এ খেলায় অংশগ্রহণ করে কেউ রাতারাতি পকেট ভারি করছেন আবার কেউ নিঃস্ব হয়ে শূন্য পকেটে বাড়ি ফিরছেন। শহর-গ্রাম সর্বত্রই চলছে রমরমা ক্রিকেট জুয়া। আগে কেবল শহর এলাকায় ক্রিকেট জুয়ার বাজি ধরতে দেখা গেলেও এখন তা মহামারির মতো প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজপড়ুয়া যুবকসহ সব শ্রেণির মানুষ। এমনকি যারা নিরক্ষর তারাও বাজি ধরছেন আইপিএল ক্রিকেট খেলায়।

[৩] ক্রিকেট জুয়ার নেশায় পড়ে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে অনেকেই এখন সর্বশান্ত। এই জুয়ার বাজি হয় মোবাইলেই। অধিকাংশ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। তাই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাই এক প্রকার ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরিচয় গোপন করে জুয়াড়িদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এছাড়াও জুয়াড়িরা বিভিন্ন নামে ওয়েব সাইট খুলে জুয়ার কারবার করছেন।

[৪] অনেকে বলছেন, কিছু ক্রিকেট জুয়াড়ি জুয়ার টাকা জোগাতে গিয়ে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। একই সঙ্গে ক্রিকেট জুয়ার হার-জিতকে কেন্দ্র করে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে।

[৫] অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই আইপিএল বিশ্বের সব তারকা ক্রিকেটারদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এ ক্রিকেট খেলার উন্মাদনার ঝড় বইছে রাণীশংকৈলের সর্বত্র।

[৬] ক্রিকেটকে নিয়ে কাপড় গার্মেন্টস দোকান, সেলুন, ক্লাব, পাড়ায়, মহল্লায়, অফিসে, বাসায় ও চায়ের দোকানে এই ক্রিকেট জুয়া এখন চলছে বেপরোয়াভাবে। জুয়াড়িরা ওড়াচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ক্রিকেট জুয়ার ছড়াছড়ি সমাজের অভিজাত ও শিক্ষিত শ্রেণি ছাড়িয়ে তরকারি বিক্রেতা, নাপিত, হোটেল কর্মচারী, রিকশাচালক, দোকানি, বেকার, ফল বিক্রেতা, বিভিন্ন পরিবহনের শ্রমিক (হেলপার ও কন্ডাক্টর) নির্মাণ শ্রমিকসহ বিভিন্ন নিম্ন পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে; বাদ পড়ছে না স্কুল-কলেজগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। কেবল স্থানীয় পর্যায়েই নয়, ইন্টারনেটে ক্রিকেট জুয়ার ফাঁদ পেতে আছে বহু ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ।

[৭] উপজেলার নেকমরদ বাজারের এক তরুণ বলেন, তিনি চার-পাঁচ বছর ধরে ক্রিকেটের বিভিন্ন আয়োজনে বাজি ধরে আসছেন। আগে স্থানীয়ভাবে বাজী ধরতেন। এখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি বাজি ধরেন। সম্প্রতি একটি ওয়েবসাইটের কাছে ৯ হাজার টাকা পাওনা করেন। তবে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ওয়েবসাইটটি। এখন অন্য ওয়েবসাইটে বাজি ধরেন তিনি।

[৮] বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, যুবসমাজের একটি বড় অংশ এই খেলাটিকে জঘন্য জুয়ার আসরে পরিণত করেছেন। তারা মূলত আইপিএল খেলা উপভোগ করেন জুয়া খেলার উদ্দেশ্যেই। খেলা শুরু হলে প্রতি ওভারে ওভারে জুয়া খেলায় টাকার অঙ্ক নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এমনকি প্রতি বলে বলেও ধরা হয় হাজার হাজার টাকার বাজি। কোন ব্যাটসম্যান বেশি রান তুলবে, কোন বোলার অধিক উইকেট শিকার করবে, কোন তারকা ব্যাটসম্যান কতটি ছক্কা অথবা চার হাঁকাবেন এ নিয়ে চলে জুয়ার দর কষাকষি।

[৯] সবশেষে পছন্দের দলের হারজিত নিয়েও চলে বড় অঙ্কের টাকার খেলা। এভাবে প্রতিটি খেলা উপলক্ষে উপজেলার সর্বত্র চলে লাখ লাখ টাকার বাজি ও মোটা অঙ্কের টাকার জুয়া খেলা। যেখানে খেলা দেখার লোকসমাগম বেশি হয় মূলত সেখানেই এই জুয়ার আসর জমজমাট হয়।

[১০] সাধারণত পাড়া মহল্লার চায়ের দোকানে অথবা যেখানে বড় স্ক্রিনে আইপিএলের খেলা দেখানো হয় সেখানেই এ জুয়ার আসর বসে। যা কেউ বুঝতে পারে কেউ পারে না। এসব জুয়াড়িরা কৌশলগত কারণে বরাবরই থেকে যায় প্রশাসনের দৃষ্টির আড়ালে। এভাবে রাণীশংকৈলে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে ও প্রত্যন্ত গ্রামে বিপিএলকে ঘিরে বসছে জুয়ার আসর। ফলে জুয়াড়িদের পাতা ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ উদীয়মান যুবসমাজ।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়