শাহজাদ হোসেন মাসুম: একটি সুন্দর মুখ, তন্বী তরুণী সকল তরুণের স্বপ্ন। একজন সুঠাম সুদর্শন তরুণও সকল তরুণীর মনের চাওয়া। যদিও আমরা কেউ মনে রাখি না, এই বাহ্যিক সৌন্দর্য্য প্রকৃতপক্ষে খুব বিভ্রান্তিকর। মনের মাঝে বিছানো মায়াজাল আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে ফেলে। আমরা গভীর কালো চোখ, ঠোঁট মোচড়ানো হাসির মাঝে নিজেকে ক্রমশ সমর্পন করি। তার সবই তখন আমাদের কাছে অনন্যা হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই তখন যেই বিষয়গুলো জীবনের জন্য সবচেয়ে জরুরি সেগুলোর দিকে নজর দিতে পারি না। আমরা বুঁদ হয়ে থাকি প্রেমিক বা প্রেমিকার মুখ আর শরীরের সৌন্দর্যে। প্রেমিকার রূপ বর্ণনায় মধ্যযুগের কবি ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের দুটি পংক্তি আমার খুব প্রিয়। সেই যুগে তিনি লিখেছিলেন, ‘কে বলে শারদ শশী সে মুখের তুলা পদনখে পড়ি আছে তার কতোগুলা’।
অর্থ খুবই সহজ, বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর আদিকাল থেকে এই ভুল চলছে। হয়তো প্রকৃতি এমনটাই চায়। কিছু বছর পরই আমরা অন্তর্গত দ্বন্দ্বগুলো বুঝতে শুরু করি। তারপর বাকি জীবন হয় মানিয়ে নেওয়া অথবা কয়লার আগুনের মতো জ্বলতে থাকা। পরিবার ছাড়তে হচ্ছে, প্রিয় শখগুলো ছাড়তে হচ্ছে, নিঃশ্বাস ফেলা যাচ্ছে না। একজন আরেকজন থেকে যোজন যোজন দূরত্বে যেতে হচ্ছে। এর মাঝে কারও ছাড়াছাড়ি হচ্ছে, কেউ মন হারাচ্ছে অন্য কোথাও। চল্লিশে আর কেউ তন্বী তরুণী নেই, খাঁজ ভাঁজ সব উধাও। ছেলেদের শরীর বাইরে থেকে ঠিক দেখালেও, ক্লান্তি সেখানেও এসেছে। স্ট্রেস, আই বি এস, লুকাতেই হাঁসফাঁস।
সঙ্গী নির্বাচনে দেখনদারীর ওপর চাপটা একটু কমানোই ভালো। মনটাকে দেখার চেষ্টা করা জরুরি। জীবন এখন আর আমাদের যুগে নেই জানি, তবু নিজের জীবন নিয়ে ট্রায়াল এ্যাড এরর খেলাটা সহনীয় হতে এখনো অনেক দেরি। এখন কেউ দয়া করে এই প্রশ্ন নিয়ে আসবা না, ভাইজান, মনে করেন শেষ পর্যন্ত মন দেখে বিয়ে করলাম, তারপর দেখা গেলো চেহারাও খারাপ মনও খারাপ, তাহলে কি হবে? আমার নিজের জন্ম নোয়াখালি। আমাকে এই রকম প্রশ্ন করা যাবে না। ‘প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। হয় নাকি?’-বলে সে তাকাল তার সঙ্গিনীর দিকে,আজ এই মাঠ সূর্য সহমর্মী অঘ্রাণ কার্তিকে প্রাণ তার ভরে গেছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :