মনিরুল ইসলাম: [২] বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মৎস্য খাত বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং এদেশে অনেক প্রাকৃতিক নদনদী ও জলাশয় রয়েছে। দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে দেশের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে যেতে হবে। এজন্য যুব সমাজকে মৎস্য উৎপাদনে উৎসাহিত ও সম্পৃক্ত করতে হবে।

[৩] তিনি বলেন, প্রতিবছর মৎস্য সপ্তাহ পালন মৎস্য সম্পদের সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং জাতীয় মৎস্য পদক মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাঙালি জাতির কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত মৎস্য সম্পদ রক্ষায় 'বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি' স্লোগানকে স্বার্থক করে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। রোববার মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে 'সংসদ ভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্পিকার এসব কথা বলেন।

[৪] স্পিকার ভার্চুয়ালি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ এর শুভ উদ্বোধন করেন এবং স্পিকারের পক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি জাতীয় মৎস্য পদক ২০২১ প্রদান করেন। পরে স্পিকার জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, হুইপ ইকবালুর রহিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এ.বি. তাজুল ইসলাম , সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সংসদ ভবন লেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, মহাশোল, সুবর্ণ রুই, পাবদা, গুলশা, গলদা চিংড়ির মোট ৯৮৩৫টি পোনা অবমুক্ত করা হয়।

[৫] স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন । জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের অবদান ১৯৭২ সালে জাতির পিতা অনুভব করেছিলেন এবং ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে পোনা মাছ অবমুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে এর শুভ সূচনা করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য উৎপাদনকে বিশেষভাবে উৎসাহিত এবং জনগণের পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য মৎস্যখাতকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার কাজ করছেন, যার সুফল জনগণ ভোগ করছে।

[৬] ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে পরিপূরক। খাদ্যনিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অনেকেই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে, ফলে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা নিধন রোধ, নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ যুগোপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

[৭] তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার জাতীয় চিংড়ি নীতিমালা এবং মৎস্যপণ্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০২০ প্রণয়ন করেছে। অধিকতর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তিনটি মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাব আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়েছে। জাতীয়ভাবে রেসিডিউ কন্ট্রোল প্লেন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।