সালেহ্ বিপ্লব: [৩] পুরো নাম মাগফার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী আজাদ, পরিবারের একমাত্র সন্তান। জন্ম ১৯৪৬ সালের ১১ জুলাই। তার বাবা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ইউনুস আহমেদ চৌধুরী এবং মা মোসাম্মাৎ সাফিয়া বেগম।
[৪] দুর্ধর্ষ এই গেরিলা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট ক্র্যাক প্লাটুনের আরো কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ নিজেদের বাড়ি থেকে পাকহানাদারদের হাতে ধরা পড়েন আজাদ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নাখালপাড়া এমপি হোস্টেলে স্থাপিত মিলিটারি টর্চার সেলে। সেখান থেকে রমনা থানায়।
[৫] ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য থানায় ছুটে গিয়েছিলেন আজাদের মা। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আজাদ মাকে বলেন, ‘এরা খুব মারে, ভয় হচ্ছে কখন সব স্বীকার করে ফেলি।’ মা তখন ছেলেকে বলেছিলেন, ‘শক্ত হয়ে থেকো বাবা। কোনো কিছু স্বীকার করবে না।’
[৬] মায়ের কাছে ভাত খেতে চেয়েছিলেন আজাদ। সেদিন আর সম্ভব হয়নি, পরের দিন মা ভাত নিয়ে যান থানায়। গিয়ে দেখেন ছেলে নেই। সেদিনই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
[৭] স্বাধীনতার পর ১৪ বছর বেঁচেছিলেন আজাদের মা। ছেলেকে ভাত খাওয়াতে না পেরে বাকি জীবন তিনি নিজেও আর ভাত মুখে তোলেননি। আজাদ রমনা থানায় মাটিতে শুয়েছিলেন। তাই ১৪ বছর একটানা মেঝেতে শুয়েই ঘুমিয়েছেন এই বীরপ্রসবিনী মা।
[৮] সাংবাদিক সাহিত্যিক আনিসুল হক তার ‘মা’ উপন্যাসে শহীদ আজাদ ও তার মায়ের সেই ঘটনাগুলো তুলে এনেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :