মঞ্জুরুল হক: কলকাতায় জন্ম নিয়েছিলেন বাঙালির ‘আইডেন্টিটি’ রবীন্দ্রনাথ। তিনি না জন্মালে কী হতো সে প্রশ্ন অবান্তর। তবে তিনি বেঁচে থাকতে এবং তার মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে প্রথমে অবিভক্ত বাংলায়, পরে দুই বাংলায় কতো শত মানুষ যে বিদ্ব্যান বনে গেছে সে হিসেবও মেলে না। জমিদার, উচ্চবিত্ত, সাম্যবাদী নন, প্রজাহিতৈষী নন, দারিদ্র না বোঝা, সাম্প্রদায়িক, উন্নাসিক...অতঃপর ‘হিন্দু কবি’। কতোই না অভিধা তার। অথচ সেই তাকে নিয়েই শত-সহস্র কবি-লেখক করে-কম্মে খাচ্ছেন। তাকে ফাতা ফাতা করে ফেলা হয়েছে। হচ্ছে। এমনকি তিনি কীভাবে আম কেটে খেতেন তা নিয়ে পুস্তক রচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে বাঙালি তাকেই ‘ভাঙিয়ে খাচ্ছে’। উপায় নেই। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি অলঙ্কৃত করেননি। না, নেই। আমার রাজনৈতিক মতবাদের দিক থেকে তিনি আমার নমঃস্য নন।
আবার আমি এটাও মনে করি; তার ছোটগল্প আর সঙ্গীত বাদ দিলে বাঙালির ভাঁড়ার ঘর প্রায় শূণ্য। সত্যি বলতে কি তার গানকে আমার কেবলই সুরবদ্ধ ছন্দময় ঐক্যতান মনে হয় না। মনে হয় মহাকালের স্বপ্নময় বাস্তবতা। আমি আজও ভেবে পাই না এই মানুষটা কীকরে এমন সুর ও বাণী সৃষ্টি করতে পারল। এ আমার পরম বিস্ময়। জন্মদিনে তারই একটি গান নিবেদন করলাম- আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে/ভোরের আলোয় মেঘের ফাঁকে ফাঁকে/ পিছু ডাকে পিছু ডাকে .../বাদল প্রাতের উদাস পাখি উঠে ডাকি/বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে/ ভরা নদীর ছায়ার তলে ছুটে চলে/খোজে কাকে, পিছু ডাকে .../আমার প্রাণের ভিতর সে কে থেকে থেকে/বিদায় প্রাতের উতলাকে পিছু ডাকে...। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :