আশরাফ আহমেদ:[২] অদম্য পরিশ্রম ও বুদ্ধি খাটিয়ে দারিদ্রতাকে জয় করে অনেকের কাছেই এখন আদর্শ হয়ে উঠেছেন নাসির উদ্দিন চুন্নু। উন্নত জাতের রেড নেপিয়ার ঘাস চাষ করেেই তিনি এখন লাখ লাখ টাকার মালিক।
[৩] জানা যায়,কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের ঢেকিয়া গ্রামের মৃত রইছ উদ্দিনের ছেলে মোঃ নাসির উদ্দিন চুন্নু। পৈত্রিক সূত্রে আড়াই বিঘা জমি পেয়েছিলেন তিনি।
[৪] সেই জমিতে ফসল ফলিয়ে তার সংসার ঠিকমত চলত না।তাই খেয়ে না খেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতো তাদের।২০১৮ সালের প্রথম দিকে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস থেকেএই নেপিয়ার জাতের ঘাসের বহুমুখী ব্যবহারের কথা শুনে এই ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ হন মোঃ নাসির উদ্দিন চুন্নু।
[৫] এরপর তিনি নেপিয়ার ঘাসের চারা সংগ্রহ করে প্রথমে তা নিজের বাড়ির পাঁচশতক জায়গায় লাগান।একমাস পরপর তিনবছর পর্যন্ত কাটা যায় এই ঘাস। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তুলেন একটি গরুর খামার। এ খামারে আঠারোটি দেশি জাতের গরু আছে।
[৬] গরু মোটাতাজাকরণ খামার এ সেই ঘাস বড় হলে গরুদের খাওয়ানো শুরু করেন। ফলে অতি অল্প সময়ে গরুগুলো বাড়তে থাকে। আবার ঘাস বিক্রি করে ভালো টাকা পেতে শুরু করেন তিনি।
[৭] ধীরে ধীরে ঘাসের জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকেন তিনি। এখন ২ বিঘা জমিতে রেড নেপিয়ার , ৫বিঘাতে নেপিয়ার ৩বিঘাতে জার্মান জাতের ঘাস চাষ করছেন তিনি। একবিঘা জমিতে উৎপাদন খরচ পড়ে প্রায় দশ হাজার টাকা। প্রতিমাসে খরচ বাদে ঘাস বিক্রি করে তার এখন মাসিক আয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
[৮] বর্তমানে তার খরের ঘরের বদলে বিশ শতক জমিতে ১০৫ হাত লম্বা আধাপাঁকা ঘর রয়েছে। এই ঘরেরই তিনটি কক্ষ গরুর খামার। বর্তমানে তার খামারে আছে ১৬টি গরুও ৩টি মহিষ। ঘাসের জমিতে পানি সেচের জন্য দুইটি শ্যালোচালিত মেশিন আছে।
[৯] এছাড়া ৫০টি হাঁস-মুরগি, পাঁচটি ছাগল রয়েছে তার। তার ৭বিঘা জমিতে রয়েছে বানিজ্যিক ভাবে মাছ চাষের ১টি পুকুর। এই পুকুরে দেশি বাংলা জাতের মাছ চাষ করা হয়।বাড়িতে বিদ্যুৎ ছাড়াও রয়েছে- একটি সৌর বিদ্যুৎ, দুইটি মোটরসাইকেল ও তিনটি ভ্যান। কর্মচারী রয়েছে তিনজন, তাদের প্রতিজনের মাসিক বেতন ৯ হাজার টাকা।
[১০] তারা প্রতিদিন জমি থেকে ঘাস কেটে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। নাসির উদ্দিন চুন্নু বলেন, আমার স্বপ্ন ব্যাপকহারে এই ঘাস চাষ করে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করা। যেন আরো অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই নেপিয়ার ঘাস চাষ করে তাদের ভাগ্য বদলাতে পারে।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন