বরিশাল প্রতিনিধি: [২] বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন ৩ আসামির উপস্থিতিতে এবং এক আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

[৩] একই সঙ্গে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

[৪] দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার কাজীরচর এলাকার আব্দুল জলিল সরদার এবং ঢাকার বনানীর মেসার্স সানলাইট এন্টারপ্রাইজ নামক ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মো. আনিছুর রহমান। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন দণ্ডপ্রাপ্ত জলিল সরদারের স্ত্রী রাশিদা এবং জেসমিন আক্তার।

[৫] ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে বরিশালের মুলাদীর কাজীরচর এলাকার আব্দুল জলিল পার্শ্ববর্তী খালাসীর চর এলাকার জনৈক আবুল কালাম ওরফে মিজানুর রহমানকে ৫ লাখ টাকার চুক্তিতে লিবিয়া পাঠানোর কথা বলে সুদান পাঠিয়ে দেয়। সেখানে পৌঁছে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৬৫ জনকে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় দেখতে পান আবুল কালাম। সেখান থেকে ট্রাকে করে ৭ দিন ও ৭ রাতে অবৈধভাবে তাকেসহ অন্যদের লিবিয়া পাঠানো হয়। লিবিয়া পৌঁছার পর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয় আবুল কালামের পরিবারের কাছ থেকে। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হলে লিবিয়া পুলিশ আবুল কালামকে গ্রেফতার করে। এর একপর্যায়ে লিবিয়ায় কর্মরত বরিশালের মুলাদীর আব্দুল বারেক খান তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেন।

[৬] দেশে ফিরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর ৪ জনকে আসামি করে বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন আবুল কালাম। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য মুলাদী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মুলাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেন খান ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

[৭] আদালতে বাদী পক্ষে এপিপি কাইয়ুম খান কায়সার এবং আসামি পক্ষে হুমায়ুন কবির মামলা পরিচালনা করেন।

[৮] এ নিয়ে বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে অবৈধ মানব পাচারের ৩টি মামলার রায় ঘোষণা হলো।