অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন : [১] একটি হত্যা চেষ্টার মামলার আসামি হওয়ায় সিকদার গ্রুপের এমডি রন হক বিমানবন্দরে গ্রেফতার।
[২] এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি পুলিশকে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
[৩] গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জামিন পেলেন রন হক সিকদার। আর ওই দিকে কার্টুন আঁকার কারণে গ্রেফতার হয়ে সাত হাজার ঘণ্টা জেল খাটার পরেও একজন কার্টুনিস্ট জামিন পায় না। অর্থ, প্রতিপত্তি, ক্ষমতা আর ক্ষমতাধরদের আশীর্বাদ থাকলে আইনের নিজস্ব গতি হয় আলোর গতি। আর এগুলো না থাকলে আইন হয় চলতে ফিরতে না পারা অন্ধ বোবা, বধির। তখন আর চলতে পারে না।
এমনিতেই দেশে কার্টুন শিল্প বিলুপ্তির পথে। বিপন্ন প্রাণি বাঁচাতে যেমন বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়, আজ কার্টুন শিল্পকে বাঁচাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে কিশোরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত। সরকারের জন্য এইটা খুবই এম্বাররাসিং একটি ঘটনা। সমস্যা হলো এম্বাররাসড হতেও ন্যূনতম যেটুকু লজ্জাবোধ থাকা উচিত সেটা আছে কিনা। না হলে কেবল কার্টুন আঁকার দায়ে একজন শিল্পী মাসের পর মাস জেলে পচতে পারে? এটা কি সভ্য দেশের লক্ষণ? দেশে কি কার্টুন শিল্পী আর বেঁচে থাকবে? কার্টুন এমন একটি শিল্প যেটির মধ্যে তোষামোদির বিন্দুমাত্র স্থান নেই। কার্টুন মানেই অন্যায়ের প্রতিবাদ।
কার্টুন মানেই ব্যঙ্গ। একটি দেশ কতোটা সভ্য তার একটি লিটমাস টেস্ট হতে পারে সেই দেশের কার্টুন শিল্প কতোটা বিকশিত। বিপন্ন প্রাণির ন্যায় বিলুপ্ত প্রায় কার্টুন শিল্পই বলে দেয় দেশে গণতন্ত্র কতোটা বিকাশমান।
এর আগে হত্যা মামলার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাইয়ের ব্যাংককে চলে যেতে পেরেছিলো। বাপরে বাপ অর্থবিত্ত আর ক্ষমতার কতো ক্ষমতা। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।