শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারী, ২০২১, ০৯:৫১ সকাল
আপডেট : ১২ জানুয়ারী, ২০২১, ০৯:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শরিফুল হাসান: আচ্ছা বলুন তো, ছেলে-মেয়ে দুটো যখন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তখন কি আপনারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন?

শরিফুল হাসান : কলাবাগানের এই ঘটনায় ভিকটিমের কনসেন্ট ছিলো এরকম একটি ন্যারেটিভ কিভাবে চাউর হলো সেটাই আমি এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। ভিকটিম তো মৃত, তার বক্তব্য আমরা পাচ্ছি না, আমরা পাচ্ছি তার রক্তাক্ত আঘাতপ্রাপ্ত লাশ। তাহলে কনসেন্ট ছিলো এই কথাটা কে বলছে আসলে? আপনারা যারা কনসেন্ট কনসেন্ট বলে মেয়েটিকে দোষারোপ করছেন, বলতে চাইছেন মেয়েটি কেন সেখানে গেল আসেন তাদের কনসেন্ট আর ধর্ষণ এ দুটো বিষয়ের পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করি।

ধরুন দুটো ছেলে মেয়ে পরস্পরকে ভালোবাসে। এখানে দুজনেরই ভালোবাসার কনসেন্ট আছে। তার মানে এই নয় মেয়েটা আপনাকে শারীরিক সম্পর্কের কনসেন্ট দিয়েছে। আবার ধরুন মেয়েটিকে ছেলেটা বাসায় ডেকেছে এবং মেয়েটির সেখানে যাওয়ার কনসেন্ট আছে। তার মানেও এই নয় যে মেয়েটা আপনাকে শারীরিক সম্পর্কের কনসেন্ট দিয়েছে। তর্কের খাতিরে ধরুন, মেয়েটা বাসায় গেছে এবং শারীরিক সম্পর্কের কনসেন্টও দিয়েছে। কিন্তু তার মানেও এই নয় যে মেয়েটার সঙ্গে আপনি গায়ের জোর খাটাবেন।
মনে রাখবেন যৌন সম্পর্ক হতে হবে দুটো মানুষের মনের সম্মতিতে। ...কারণেই স্বামীর বিরুদ্ধেও স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারে। শুধু এই কারণে বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে বিয়ের পরও বহু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলুন। বিস্তারিত জানতে পারবেন। আমার ভীষণ আফসোস লাগে যে আমাদের দেশের বেশিরভাগ লোক মনে করে একটি মেয়ে একটি ছেলের প্রেমে সাড়া দিয়েছে তার মানে সব দোষ মেয়েটার। এই যে ফেসবুকে সমানে মেয়েটাকে দোষারোপ চলছে, আচ্ছা বলেন তো এই ছেলে মেয়ে দুটো যখন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তখন আপনারা কি সেখানে উপস্থিত ছিলেন? তাহলে কীসের ভিত্তিতে বলছেন মেয়েটার কনসেন্ট ছিল? আর তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই তার কনসেন্ট ছিল তাহলে মেয়েটি কী চেয়েছিল তাকে অত্যাচার করে মেরে ফেলবে? কখনোই নয়। শুধু এ কারণেই এটা হত্যা।

মনে রাখবেন আপনার সঙ্গে কেউ হাসি মুখে কথা বলছেন মানে এই নয় সে আপনাকে প্রেমের কনসেন্ট দিচ্ছে। আবার আপনার সঙ্গে প্রেম করছেন মানে এই নয় যে আপনার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কনসেন্ট দিচ্ছে। আবার আপনার সঙ্গীটি শারীরিক সম্পর্কের কনসেন্ট দিয়েছে মানে এই নয় তাকে শারীরিক নির্যাতন করবেন।

বিষয়গুলো না বুঝলে কখনোই ধর্ষণ আর প্রেমের পার্থক্য বুঝবেন না আর কখনো মানুষও হতে পারবেন না। কেউ যদি আমার ব্যক্তিগত মতামত জানতে চান তাহলে আমি বলবো বিয়ের আগে আমি সব ধরনের শারীরিক সম্পর্কের বিরোধী। কিন্তু দুজন মানুষ পরস্পরের কনসেন্টে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করে আমার তাতে বলার কিছু নেই। শুধু একটি অনুরোধ কনসেন্ট শব্দটার মানে বুঝবেন। মনে রাখবেন কনসেন্ট মানে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা। কনসেন্ট মানে দুজন আলাদা মানুষের সমান মর্যাদা। আফসোস লাগে যে দেশে প্রকাশ্যে দিনের বেলাতেও শাহবাগ থেকে ফার্মগেট কিংবা আধা কিলোমিটারের কোন রাস্তাতেও একটা মেয়ে নিরাপদ হেঁটে যেতে পারে না সেই দেশের পুরুষেরা আমরা কথায় কথায় মেয়েদের দোষারোপ করি। শোনেন কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আপনার বাড়ির বোন স্ত্রী মা বা পরিবারের যে কোন নারী সদস্যকে জিজ্ঞেস করেন এদেশের রাস্তায় হাঁটতে কতোটা অস্বস্তি তাদের লাগে উত্তর পেয়ে যাবেন। মনে রাখবেন এদেশের ঘরের বাইরে নারী কিংবা শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয় পুরুষের। ধর্ষক এই পুরুষেরা সমাজের জন্য ভয়ঙ্কর। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেককে বিবেকবোধ দিক। আমরা প্রত্যেকে যেন মানুষ হতে পারি। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়