ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি জানাতে আজ রবিবার একটি সমন্বিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত তদন্তে পাওয়া তথ্য ও গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
এদিকে হাদিকে গুলির ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হওয়া মামলাটি শনিবার হত্যা মামলা হিসেবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, সব সংস্থা মিলে তদন্তের অগ্রগতি জানাতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে তদন্তের সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন হাদি। ঘটনার দিন প্রচারণা চালানোর পর তাকে গুলি করা হয়।
তাকে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তারা হলেন– প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, সহযোগী মো. কবির ওরফে দাঁতভাঙ্গা কবির, মো. ফয়সাল ও গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে আব্দুল হান্নান।
এ ছাড়া সীমান্তে অবৈধভাবে লোক পারাপারে (মানবপাচার) জড়িত সঞ্জয় চিসিম ও সিবিয়ন দিও এবং ফয়সালকে পালাতে সহায়তা করা মো. নুরুজ্জামান নোমানীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া দুই গাড়িচালককে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে।
হাদি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এর আগে করা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে। গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় মামলাটি করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। এজাহারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা ফয়সাল করিম মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা ও অর্থের জোগানদাতাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হাদির মৃত্যুর পর শনিবার সেই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে আদালতে আবেদন করে ডিবি। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে হত্যা মামলা হিসেবে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে শনিবার সকালে হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মর্গ সূত্রে জানা যায়, মাথায় লাগা গুলির চিহ্ন ছাড়াও বুকে একটি ফুটো পাওয়া গেছে। সেটি সম্ভবত চিকিৎসার প্রয়োজনে করা হয়েছিল।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোডে চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে আসা দুজন তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ফুটেজ দেখে গুলি ছোড়া ব্যক্তিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ বলে শনাক্ত করেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। আর ওই সময় মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন আলমগীর হোসেন ওরফে আলমগীর শেখ। গুলির ১২ ঘণ্টার মধ্যেই তারা ময়মনসিংহের ধোবাউড়া–হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যান বলে জানা যায়।