আমিনুল ইসলাম: বুয়েটের ছাত্র আবরারের কথা বোধকরি আমরা এর মাঝেই ভুলে গিয়েছি। যাকে হলের ভেতর পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো তারই কিছু সহপাঠী। এর পরের দৃশ্য তো আমরা সবাই দেখেছি কীভাবে তাকে টেনে নিচে নামানো হয়েছিলো ইত্যাদি। দিন কয়েক আগে এই মামলার শুনানি হয়েছে। তখন আবরারের চাচা বুয়েটের প্রভোস্টকে জিজ্ঞেস করেছে। আপনি তো জানতেন আবরারকে মারা হচ্ছে। আপনি কেন কিছু করেননি? বুয়েটের শিক্ষক এই ভদ্রলোক কী উত্তর দিয়েছে জানেন। কিছু বলিনি, নইলে আমাকেও মারবে। সেদিন থেকেই কিছু প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে একটা মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, এরপরও আপনার মনে হয়নি কিছু করা উচিত। উল্টো আপনি ভেবেছেন, কিছু বললে আপনাকেও মারবে। তাহলে ওই একই ছাত্রদের আপনি পড়ান কীভাবে কিংবা তাদের গ্রেড কীভাবে দেন। তখনো কি একই ভয় কাজ করে। এই একই প্রশ্ন, দেশের বাদ বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে। আপনারা যদি আপনাদের ছাত্রদের এতো ভয়ই পেয়ে থাকেন। তাহলে পড়াচ্ছেন কীভাবে। কীসের ভিত্তিতে তাদের যাচাই করছেন। যেই গ্রেডগুলো দিচ্ছেন, সেগুলো কি ঠিক মতো দিচ্ছেন নাকি বুয়েটের এই প্রভোস্টের মতো আপনারাও ভয়ে থাকেন।
কেন ভয়ে থাকেন, কোথায় আপনাদের এতো ভয়, কোন কারণে এতো ভয়? আপনি যদি কোনো অন্যায় করে না থাকেন, তাহলে তো ভয় পাবার কথা নয়। নাকি শিক্ষক হয়েছেন তাদের মতো ছাত্রদের ধরে। প্রভোস্ট কিংবা ভিসিও হয়েছে তাদেরই ধরে। এই হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক এবং শিক্ষা ব্যবস্থা। একটা ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে অন্য ছাত্ররা, আর তাদের মনে হচ্ছে এ আর এমন কি। মারুক, আমাকে তো আর মারছে না! এসব ছাত্ররাই আবার পাস করে কেউ শিক্ষক হচ্ছে, কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা আমলা। এবার বুঝে নিন, কেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নকল মাস্কের ব্যবসা করছে। কেন ডাক্তার নকল টেস্টের বিজনেস করছে, আর পুলিশের সদস্যরা ডোপ টেস্টে ধরা পড়ছে। নিশ্চিত জেনে রাখুন, সিসি ক্যামেরার ওই ভিডিও যদি ফাঁস না হতো। তাহলে আবরারের হত্যাকারীরা এতো দিনে মেধাবী বুয়েটের ছাত্রের উপাধিই পেতো। এরপর তাদেরই কেউ বড় বড় জায়গায় চাকরি করতো। আহা কতো মেধা এই দেশে। এই মেধাগুলো যে কীভাবে তৈরি হচ্ছে, আদৌ তারা আর মানুষ আছে কিনা, সেটা দেখার অবশ্য আমাদের কোনো দরকার নেই। ফেসবুক থেকে