খালেদ মুহিউদ্দীন : আমাদের ফুটবল খেলা দেখার মজাটা নষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। যতোক্ষণ তিনি আছেন দমবন্ধ করে খেলা দেখি, তিনি নেই তো তার স্মৃতিচারণ! ডিয়েগো ম্যারাডোনা তার আগের কথা জানি না, পরে যতো খেলোয়াড়ই এসেছেন আমার মনে হয়েছে ভালো অনেকই ভালো কিন্তু তার মতো কি ভালো? তিনি যে ভালো খেলেন তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হতে হতো না, চোখ থাকলেই বোঝা যেতো তা। ফুটবল নাকি দলের খেলা, দলেরই তো।
১৯৮২ সালে সবাই বলাবলি করছিলো, এই ছোটোখাট ছেলেটা কিন্তু বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। সবার বলাবলি উহু আহা সাবধান সতর্কতার মধ্য দিয়েই ১৯৮৬ সালে তিনি কাপ জিতে নিলেন, ১৯৯০ সালে রানারআপ। যে দলের হয়ে তা করলেন, তার লাইনআপ আর অন্য দলগুলোর শক্তি সামর্থ্য মনে করুন, বুঝবেন ওয়ান ম্যান শো কাকে বলে। যতোদিন তাকে দেখেছি মাঠে, ততোদিনই নিষ্ঠুর মার খেতে দেখেছি। এমনকি সবাই মিলে মারতো তাকে। তিনি অবিচল থাকতেন। আমার শিক্ষক ইংরেজ ফুটবল লেখক রিচার্ড এডামসন বলতেন কোকেন, বুঝেছ হে কোকেন।
আমি বলতাম হুম কোকেনই হবে। প্রচলিত কোনো কিছু দিয়ে তো তাকে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। হেন অনাচার নাই করেননি তিনি। ভালো ছেলে তো নন। অহংকারী, অপচয়কারী, খামখেয়ালি। আক্ষরিক অর্থেই কুড়েঘর থেকে উঠে এসে সম্রাট হয়েছেন, খেলা ছেড়েছেন ২৫ বছরের বেশি, এখনো তিনি তারকাদের তারকা। একজন আলাদা। আমার স্পেনিশ বন্ধুরা বলে আমরা তার নামটিও নাকি বলতে পারি না, তার দেশের নামটিও নাকি আমরা ভুল উচ্চারণ করি। তিনি নাকি মারাদোনা, তার দেশ আর্হেন্তিনা। আমি শুধু বলি ম্যারাডোনা আমাদের কাছে ফুটবলের আরেক নাম আর তার কারণে আর্জেন্টিনা ভালোবাসার। লেখক : প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ।
আপনার মতামত লিখুন :