আসিফুজ্জামান পৃথিল: [২] ছোটখাট শরীরের এক মানুষ। এক কানে দুল। আর বাহুতে আঁকা আর্নেস্তো চে গুয়েভার ট্যাটু। প্রায়শই দেখা যেতো ফিদেল ক্যাস্ট্রো কিংবা হুগো শ্যাভেজের সঙ্গে। যিনি ভাবতেন লাতিন আমেরিকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বইছে লাল প্রবাহ। তিনি ম্যারাডোনা। কখনও ফুটবল ইশ্বর, কখনও বল্গাহীন যাপিত জীবনের শিরোনাম, আবার কখনও একজন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ‘কমিউনিস্ট’।
[৩] দিয়াগোর প্রসঙ্গ যখনই উঠবে সামনে আসবে ফুটবলার দিয়াগোর গল্প। তবে আড়ালে ঢাকা পড়া ‘রাজনীতিবীদ’ ম্যারাডোনা। চে’র মতো ম্যারাডোনার জন্মও আর্জেন্টিনায়। চে’র স্বপ্ন ভুমি আনহেনতিনা। ম্যারাডোনাও এক সত্যকারের আন্তর্জাতিক পৃথিবীর স্বপ্নই দেখতেন। তাই এক হাকে আাঁকা ছিলো চে’র ছবি, আর এক পায়ে ফিদেল ক্যাস্ট্রোর।
[৪] ১৯৮৭ সালে আর্জেন্টাইন বার্তা সংস্থা প্রেসনা ল্যাটিনাকে এক স্বাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা বলেন, ‘তারা বলে ফিদেল ক্যাস্ট্রো সিয়েরা মায়েস্ত্রা শুরু করেছিলেন ১২ জন পুরুষ আর ৩টি রাইফেল নিয়ে। আমি বুঝতে পারি তারা কেনো জিতেছিলেন। তারা ছিলেন লোহার তৈরি। ফিদেল ক্যাস্ট্রো এমন এক মানুষ, যাকে ভোলা যাবে না।’ সেই সুরেই বলা যায়, ম্যারাডোনা এমন এক মানুষ, যাকে কখনও ভোলা যাবে না।
[৫] ম্যারাডোনা ড্রাগ অ্যাডিকশনের কারণে নিশে:ষ হবার পথে ছিলেন। জেলও খেটেছেন। জেলখানায় বসে মাফিয়াদের সঙ্গে পার্টি করে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। ২০০ সালে তাকে কিউবায় ডেকে পাঠান ক্যাস্ট্রো। সেখানে লা পেদেরা ক্লিনিকে শুরু হয় এই ফুটবল কিংবদন্তীর চিকিৎসা। সেখানে শুধু সুস্থই হননি তিনি। নিয়ে এসেছিলেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞাও।
[৬] ম্যারাডোনা বলতেন, তার বিপ্লবের ক্ষেত্র ১২০ গজের মাঠটি। আর অস্ত্র ফুটবল আর পা জোড়া। প্রায় শূণ্য থেকে নাপোলিকে শীর্ষে নিয়ে আসার পেছনে ছিলো পোলিতারিয়েতকে সামনে নিয়ে আসার উদগ্র বাসনা। ম্যারাডোনা পেরেছেন। ফুটবল মাঠে তিনি পা দিয়ে যে ফুল ফুটাচ্ছিলেন, তার রঙটা হয়তো লালই ছিলো।
আপনার মতামত লিখুন :