রাশিদুল ইসলাম : করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয় মাথা থেকে সরিয়ে বেঙ্গালুরুর খাদ্যরসিকরা ভোর ৪টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন রোজ। ১.৫ কমি লম্বা সেই লাইন! বেঙ্গালুরুর হসটোকের একটি দোকানে প্রতিদিন এই ঘটনা ঘটছে বলেই জানা যায়। দি ওয়াল
বর্তমানে অনেকের মধ্যেই বিরিয়ানি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। আগে ভারতবর্ষের প্রতিটা শহরে এত বিরিয়ানির দোকান ছিল না। কিন্তু ৩-৪ বছরের মধ্যে বিরিয়ানি খাওয়ার চল এত বেড়েছে যে আঞ্চলিক খাবারের দোকানকে পিছনে ফেলে শুধু বিরিয়ানির দোকানে ভরে যাচ্ছে দেশের নানা শহর।
সম্প্রতি লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ ছিল। শুধু ব্যবসার যে ক্ষতি হয়েছে এমনটা নয়, বহুদিন দোকানের বিরিয়ানি না খেতে পাওয়ার জন্য খাদ্যরসিকদের একেবারে চোখে জল চলে আসার মত অবস্থা। এমনকি লকডাউনের মধ্যে ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি সার্চ করতে দেখা যায় ‘হাউ টু মেক চিকেন বিরিয়ানি’! সে যতই বানানোর চেষ্টা করুন, রেস্টুরেন্টের স্বাদ কি এত সহজে পাবেন?
বেঙ্গালুরুর হসটোকের ‘আনন্দ দম বিরিয়ানি’র মালিক জানান, “আমাদের দোকান ২২ বছরের পুরোনো। কোন খারাপ মশলা বা উপাদান আমরা ব্যবহার করি না। আমাদের কাস্টমারদের কথা মাথায় রেখে খাবারের কোয়ালিটির সঙ্গে একেবারেই আপস করি না।”
লকডাউনে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি ভেবেছিলেন হয়ত এই ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু দোকান খোলার পর থেকে এত ভিড় হতে শুরু করে যে তাতে কয়েক মাসের ক্ষতিপূরণ হয় কয়েক দিনেই। এখন তারা আগের মতই রোজ একহাজার কিলোগ্রাম বিরিয়ানি তৈরি করেন।
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন কাস্টমার জানান, “আমি ভোর ৪টেয় এসেও অনেকের পিছনে। সকাল ৬.৩০ টায় আমি খাবারটা হাতে পেয়েছি। লাইনে থাকতে থাকতে একটুও ক্লান্ত হইনি। এই দোকানের বিরিয়ানি এতটাই সুস্বাদু যে বহুক্ষণ অপেক্ষা করাটা সত্যিই সার্থক হয়।”
১.৫ কিমি লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরও একজন কাস্টমার জানান, “আমি আজ প্রথমবার এসেছি। সবার মত আমিও প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অনেক লোকের মুখে শুনেছি এই দোকানের বিরিয়ানির প্রশংসা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিরিয়ানির তারিফ করেছে বহু ফুড ব্লগার। তাদের কথা শুনেই আমি আজ এখানে এসেছি।”
বিরিয়ানি কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আদেশ যে কেউই মানেননি সেটা ছবি দেখলেই বোঝা যাবে।