শিরোনাম
◈ পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরার ময়নাতদন্তে ভয়ঙ্কর সব তথ্য ◈ অর্থের বিনিময়ে ৬ বছরের শিশুকে বিয়ে: তালেবান প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আপাতত রক্ষা! ◈ আবারও মে‌সির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয় ◈ এখন থেকে আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নাম থাকবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা

প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১১:১১ দুপুর
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১১:১১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এনামুল হক শামীম: শুভ জন্মদিন, বাঙালির আশার বাতিঘর শেখ হাসিনা

এনামুল হক শামীম: বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ঘর আলোকিত করেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুভ শুভ শুভ দিন, আজ বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্মদিন। আজ থেকে ৭৩ বছর আগে টুঙ্গিপাড়ায় যে মেয়েটির বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশের হাল ধরেছেন শক্ত হাতে। করোনাকালে বিশ্বের বড় বড় দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন সঠিক ও সমপোযোগী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ বর্তমানে ৩৮.৬ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। শেখ হাসিনা এমন একজন নেত্রী যিনি একটি নির্বাচন শেষে আরেকটি নির্বাচন নিয়ে ভাবেন না, তিনি ভাবেন পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ গড়ছেন। শেখ হাসিনাই একমাত্র বাঙালির মর্যাদার প্রতীক। আমাদের সবার প্রিয় নেত্রী, প্রিয় আপা, আমাদের অহংকার, বাঙালির আশার বাতিঘর। শুভ জন্মদিন বাঙালির আশার বাতিঘর শেখ হাসিনা।
ভারতের মহাত্মা গান্ধী কংগ্রেস সৃষ্টি করেননি, তিনি কংগ্রেসে যোগ স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, পাকিস্তানের জিন্নাহ মুসলিম সৃষ্টি করেননি, যোগ দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। সে কারণে জাতির পিতা হতে পেরেছেন। অন্যদিকে ভিন্ন ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিজ হাতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে ধীরে ধীরে জনমত সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধু যা বলতেন, বাঙালি জাতি তাই শুনতেন। তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে এদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন তারা পুরো পরিবার। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন সপরিবারে হত্যা করলো খুনি মোস্তাক ও খুনি জিয়ার প্রেত্মাতারা, রাতারাতি শেখ হাসিনার চারপাশটা বদলে গেল। তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু তাদের জীবনে নেমে আসে এক দুর্বিষহ সময়। শেখ হাসিনার ভাষায়, যারা তার পিতার করুণায় নিজেদের আখের গুছিয়েছেন এমন মানুষেরাও মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এদেশ, সেদেশ ঘুরে শেষে বোনসহ শেখ হাসিনার আশ্রয় মেলে ভারতে। সেখানেই ৬ বছর আশ্রিত জীবন কাটাতে হয় বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যাদের। ‘সহযাত্রীদের ফিনকি দিয়ে ছুটে আসা উষ্ণ রক্তে স্নাত হয়েছেন, বন্দি জীবন কাটিয়েছেন। তবু থামেনি তার অভিযাত্রা’। ১৯৮১ সালের ১৭মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। এর আগেই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। জাতির পিতাকে হারিয়ে তখন ধুকছে আওয়ামী লীগ। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিধ্বস্ত এ দলটিকে পুনর্গঠন করা তরুণ শেখ হাসিনার জন্য সহজ কাজ ছিলো না। একদিকে সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াই, অন্যদিকে দলকে সংগঠিত করা। ফলে দলে নিজের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাও ছিলো তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এসব কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো একযোগে মোকাবেলা করতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে।

তিনি বিচক্ষণতা, বুদ্ধিমত্তা ও ধৈর্য্যরে সঙ্গে একে একে সব বাধাই ডিঙ্গিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বেই ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সালে বেগম সুফিয়া কামাল শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়ে আশীর্বাণী দিয়েছিলেন। এই ভাবে শেখ হাসিনা সাহসের সাথে সংগ্রামে এগিয়ে অগ্রবর্তিনী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা অর্জন করছেন। আর ঘাতক মুষক গোপন থেকে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পদদলিত হওয়ার আকাঙ্খায় কৃমিকীট হয়ে আত্মগোপন করেছে। আল্লাহ সহায় হোন, শেখ হাসিনা অজেয় অমরত্ব লাভ করে সর্বদলের বিজয়িনী হয়ে বিরাজ করুন এই প্রার্থনা আজ সর্বজনার কাছে’। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

পিতার রাজনীতি তার অস্তিমজ্জায়। তার বাবার রাজনৈতিক উত্থান নিজের চোখে তিনি দেখেছেন। কীভাবে বঙ্গবন্ধু তার রাজনীতির গগণ পথে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে কীভাবে সবাইকে পেছনে ফেলে একদল বিশ্বস্ত সহযোগীদের নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে– এগুলো দেখে-শিখেই বেড়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। আর ছাত্রলীগের কর্মী থেকে রাজনীতির পাঠ গ্রহণ, স্কুল-কলেজে পড়ার সময় থেকেই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতাও তখন সবার দৃষ্টি কাড়েন এবং বিশ্বস্ত-গ্রহণযোগ্য হয়ে ১৯৬৬ সালে বেগম বদরুন্নেছা কলেজ ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে ভিপি (সহ-সভাপতি) নির্বাচিতও হন।

মানববতার মা শেখ হাসিনার পেছনে ফেলে আসা ৭৩ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় তিনি প্রতিকূল স্রোতে নৌকা বেয়ে চলেছেন। শেখ হাসিনার জীবনগাথা যেন এক রুপকথার গল্প। দুঃখিনি রাজকন্যার দুঃখ-কষ্ট, রোমাঞ্চকর নানা ঘটনার কোনটিরই ঘাটতি নেই তার জীবনে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা’, বলিষ্ঠ একজন সমাজ সংস্কারক। গত বছর ইউনেস্কোর সাবেক প্রধান ইরিনা বোকোভা বলছিলেন, ‘সাহসী নারী’ হাসিনা সবাইকে পথ দেখাচ্ছেন। আসলেই তিনি সবাইকে পথ দেখাচ্ছে। বিশ্বে ৪ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তিনি একাই।

শেখ হাসিনার চলার পথ মোটেও কুসুমাস্তীর্ণ নয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনাকে কমপক্ষে ২১ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এসব হামলায় প্রতিবারই শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী হতাহত হয়। সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হামলাটি চালানো হয় বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও গুলি চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ মোট ২৪ জন গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান। ক্ষমতায় থেকেও শেখ হাসিনার স্রোতের প্রতিকূলে নৌকা বাওয়া থেমে নেই। সরকার প্রধান হিসেবে জীবনের ঝুকি নিয়ে তিনি মানুষের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর শেখ হাসিনার দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মধ্যে দিয়েই মূলত উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণের এক অবিশ্বাস্য যাত্রা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের আগেই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। তাই ডেল্টা প্ল্যান ২ হাজার ১০০ ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে প্রকল্প এগিয়ে কাজও শুরু করেছেন। এই জাতির পিতার ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত একটি সুখি সমাজ গঠনের লক্ষ্য পূরণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। এ উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। শেখ হাসিনা তার কর্মের জন্য পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, সম্মাননা ও পুরস্কার। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের শিকার কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া ও তাদের পাশে দাঁড়ানোয় বৃটিশ গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ নামে আখ্যা দিয়েছে।

দেশের গণমানুষই বঙ্গবন্ধুকন্যার চলার পথের মূল শক্তি। গফরগাঁওয়ের রিকশা চালক শেখ হাসিনার জমি কিনে রেখে যান। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সেই হাসমত আলীর কথা বলছি, একজন গরিব রিকশা চালক। মৃত্যুর আগে হাসমত আলী তার স্ত্রী রমিজা খাতুনকে শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। ২০১০ সালের ৪ এপ্রিলের সকালবেলা কালের কণ্ঠের সাংবাদিক হায়দার আলীকে জড়িয়ে ধরে রমিজা খাতুন কাঁদলেন। বললেন, ‘মরার আগে কাদিরের বাপ (হাসমত আলী) জমির দলিলডা হাতে দিয়া আমারে কইছিলো, আমি মইরা গেলে আমার এতিম মাইডার কাছে (শেখ হাসিনা) জমির দলিলটা পৌঁছাইয়া দিবি। অহন দলিলডা তার হাতে দিয়া যাইতে পারলে আমি মইরাও শান্তি পামু।’ সেই জমি বৃদ্ধাকে ফেরতসহ পাকাঘর করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এখানেই শেষ নয়, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী যখন দেশবাসীর প্রতি ত্রাণ তহবিলে অর্থ চাইলেন, তখন শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার বাতিয়াগাঁও গ্রামের ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন। তিনি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে টাকা দিয়ে বললেন, ‘দেশে এহন মাইনসে কষ্ট করতাছে। এহন আর ঘর-দরজা দিলাম না। টেহা (টাকা) ইউএনও সাবের হাতে দিলাম। দশেরে দিয়ে দেখ, খাইয়ে বাঁচুক।’ ভিক্ষুক নাজিম কষ্ট ঘর করার জন্য টাকাটা গছিত করেছিলেন। এমন হাজারো হাসমত আলী, নাজিম উদ্দিনের মতো মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসেন বলেই তিনি সাফল্যের সিড়ি বয়ে উঠে চলেছেন।

৩৮ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে শুধু উপমহাদেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃবৃন্দের নজর কাড়েন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক জোট-দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয়ী হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন আন্দোলন-সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন। আইনি বাধা অপসারণের জন্য সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে, সেই কালো আইন ও কলঙ্কময় অধ্যায় ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিতকরণ বিল’ সপ্তম সংসদে উত্থাপন করেন। ওই বছর ১২ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয় এবং ১৪ নভেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি পরিপূর্ণভাবে আইনে পরিণত হয়। ফলে বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের মাধ্যমে জারি করা এবং মেজর জিয়াউর রহমানের সময় বৈধতা পাওয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়। আর এভাবেই ওই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিলুপ্ত করার মাধ্যমে শুরু করে বাঙালি জাতির কলঙ্ক মোচনের কাজ। স্বাধীনতাকামী বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের অশুভ ছায়া যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধী, চিহ্নিত রাজাকারদের বিচারের মাধ্যমে স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মকে অভিশাপমুক্ত করেন একমাত্র শেখ হাসিনা। ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষেরও বেশি নারী মুক্তিযোদ্ধার সম্ভ্রম বিনাশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার সঠিক স্রোতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিটি সময়ে মিনিটে-মিনিটে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে।

শেখ হাসিনা আমাদের শিখিয়েছেন, সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে মাথা উঁচু করে কীভাবে পশ্চিমাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সঠিক বিচারের মাধ্যমে মানবতাবিরোধীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হয়। দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে কীভাবে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রেখে দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতুর দৃশ্যায়ন করতে হয়। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি কতোটুকু দায়িত্ববান হলে নিজ দলের কোনো নেতাকর্মী অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হলেও আপোসহীনভাবে কীভাবে আইনের আওতায় আনতে হয় এটি একমাত্র শেখ হাসিনাই আমাদের সামনে উদাহরণ। পাকিস্তানের জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে, বার বার মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ১৯৭১ সালে অধিকার বঞ্চিত বাঙালিদের যেভাবে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ঠিক তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের যেখানেই মানুষ তার অধিকার বঞ্চিত হবে, যেখানেই শোষণ আর নির্যাতনের শিকার হবে, নিষ্পেষিত হবে মানুষ আর মানবতা ; সেখানেই ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই শুভ কামনায় শুভ জন্মদিন।

একটি কাঙ্খিত স্বপ্ন নিয়ে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরাধিনতার শৃঙ্খল ভেঙে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে তা পুরণ হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ধাক্কা ছিলো। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে ইতিহাসের স্বপ্ন ভঙ্গ হতো। সেই আকঙ্খার পরিণত যিনি জাতির পিতাতে পরিণত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সপতিতে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতো না। ইতিহাসের নৈবিত্ত সাজানো, সেটা হচ্ছে সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন। সেটা বাস্তবায়ন হতো না। তাকে ঘিরে এগিয়ে যেতে হবে।

আসুন শেখ হাসিনাকে আলোকবর্তিকা ধরে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি। ইতিহাসের নৈতিত্ত যে সাজানো বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরে। শেখ হাসিনাকে আলোক বর্তিকা ধরে নিয়ে অন্ধকার অনামিষাকে পাড়ি দেই। মুক্তিযুুদ্ধের চেতনায় অপ্রতিরোধ যাত্রায় দুর্গম কর্ককান্তি পথে তাকে ঘিরেই এগিয়ে যাবো এটাই হোক আজকের প্রত্যাশা।

লেখক : উপমন্ত্রী,  পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সাবেক ভিপি, জাকসু

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়