শিরোনাম
◈ ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মেট্রোরেলের ৪টি স্টেশনে ফাটল, খসে পড়েছে টাইলস ◈ ৩২ ঘণ্টায় চার ভূমিকম্প: ঢাকায় বড় কম্পনের শঙ্কা বাড়ছে ◈ ঢাকায় ২২ লাখ ভবনের মধ্যে ২১ লাখই ঝুঁকিপূর্ণ, বড় ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয়ের শঙ্কা ◈ ভূমিকম্পে হতাহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা ◈ উত্তপ্ত আন্ডারওয়ার্ল্ড: আধিপত্যের লড়াইয়ে বাড়ছে খুন-খারাপি ও চাঁদাবাজি ◈ ভূমিকম্পে ফাঁটল: আতঙ্কে ছাত্রাবাস ছেড়ে সড়কে রাত কাটাচ্ছেন ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ বকশিবাজারে আলিয়া মাদরাসায় ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী (ভিডিও) ◈ ভারত আইনগতভাবে হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে বাধ্য: নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুনিরুজ্জামান ◈ ভূমিকম্পে মৃত্যু: ছেলেকে হারিয়ে নিজেকেই দায়ী করছেন মা নিপা ◈ মুশফিককে কেন রেকর্ড গড়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি, ব্যাখ্যা দিলেন আশরাফুল

প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৬:০২ সকাল
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৬:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছোট্ট দুই শিশুর প্রতি সৎমায়ের এ কেমন আচরণ?

রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরের পীরগঞ্জে দুই শিশুকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সৎমায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভিডিও এবং ছবি দেখে সমালোচনা করেছে নেটিজেনরা। অনেকে আবার সৎমায়ের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এ ঘটনায় সৎমা ও বাবার বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর পীরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন সৎমা ও বাবা। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠায়। জামিনে বেরিয়ে নানাভাবে ফের ষড়যন্ত্র করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দুই শিশুর স্বজনরা।

জানা গেছে, আট বছর আগে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি এলাকার মাসুদ আহমেদের মেয়ে মুনিয়া আক্তারের সঙ্গে রংপুরের পীরগঞ্জের খোলাহাটি এলাকার জাহিদুল ইসলাম সেতুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুইটি ছেলে জ্ন্মগ্রহণ করে। জীবিকার তাগিদে জাহিদুল ঢাকায় চাকরি করতেন। তার স্ত্রী প্রথম দিকে ঢাকায় থাকলেও পরে দুই ছেলেকে নিয়ে পীরগঞ্জে থাকতেন। জাহিদুল ঢাকা থেকে ছুটি নিয়ে পীরগঞ্জ এলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

এরইমধ্যে ঢাকায় গোপনে আরো একটি বিয়ে করেন জাহিদুল। এছাড়া গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কৌশলে দুই ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে জিম্মি করে মুনিয়ার কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেন। পরে দুই ছেলেকে ফেরত চাইলে জাহিদুল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুমনা বেগম সন্তানদের মারধরসহ জীবননাশের হুমকি দিয়ে মুনিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে মুনিয়া কোনো উপায় না পেয়ে ঢাকায় চলে যান এবং পোশাক কারখানায় কাজ করতে থাকেন।

আশপাশের পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে মুনিয়া জানতে পারেন, প্রায়ই শিশু দুটিকে সৎমা সুমনা নির্যাতন করেন। ঠিকমতো তাদের খেতে দেন না। ৯ আগস্ট রাতে জাহিদুলের উপস্থিতিতে সৎমা সুমনা দুই শিশুকে চড়-থাপ্পড়সহ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। এ সময় দুই শিশুর মাথায়, বুকে, পিঠে লাথি ও ধারালো ছোরা দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনার সময় প্রতিবেশীরা দুই শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় মমতাজ নিগার সঙ্গীতা চৌধুরী নামে মুনিয়ার এক ননদ প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর, হত্যাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন জাহিদুল ও সুমনা। পরদিন পীরগঞ্জ থানায় জিডি করেন সঙ্গীতা।

পরবর্তীতে দুই শিশুর মা মুনিয়া মোবাইল ফোনে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঘটনা জানতে পেরে ১৯ আগস্ট পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এতে কাজী জাহিদুল ইসলাম সেতুকে প্রধান ও সুমনা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর পীরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন সেতু ও সুমনা। সেখান থেকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় শিশুরাও আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে ম্যাজিস্ট্রেট শিশু দুটিকে তাদের দাদার জিম্মায় দেন।

ওই এলাকার খন্দকার শামীম তাবাসসুম ও কাজী রেলা বলেন, সৎমা সুমনা অমানবিকভাবে দুই শিশুকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। আমরা বিভিন্ন সময় নিষেধ করেছি। তিনি আমাদের কথা রাখেননি। ঘটনার দিন দরজা বন্ধ করে নির্মমভাবে দুই শিশুকে পেটান সুমনা।

সন্তান দুটির মা মুনিয়া আক্তার বলেন, জোর করে তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর থেকে আমার দুই সন্তানকে নির্যাতন করেছেন তারা। ঠিকমতো খেতেও দেননি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একজন উপ-সচিব আসামিদের আত্মীয় হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আবার জাহিদুলও বিচারকের গাড়িচালক পরিচয় দিয়ে আদালতসহ বিভিন্ন মানুষকে প্রভাবিত করছে। আমি একা, এজন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

শিশু দুটির দাদা কাজী শামিম আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, শিশুদের আমার জিম্মায় দিয়েছে আদালত। বর্তমানে তারা ভালো আছে। প্রথমে শিশু দুটিকে উদ্ধারের পর পীরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানকার ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার এসআই মিলন বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি খুবই অমানবিক। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। মেডিকেল সার্টিফিকেট পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

মমতাজ নিগার সঙ্গীতা চৌধুরীর করা জিডির বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্তের অনুমতি পেলে অবশ্যই সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়