শিরোনাম
◈ নুর ইস্যুতে গণঅধিকার পরিষদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ◈ কঠিন সমীকরণের সামনে বাংলাদেশ সুপার ফোরে যেতে ◈ গত অর্থবছরে ব্যয় সংকোচনে সরকারের ৫৬৮৯ কোটি টাকা সাশ্রয় ◈ মানুষের জন্ম হয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য: প্রধান উপদেষ্টা ◈ যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ কমাতে চায় সরকার ◈ ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ ◈ মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা আসছে আজ ◈ চীনা দূতাবাস কর্মকর্তাদের দক্ষিণ এশিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ, ভারতকে সতর্ক থাকার আহ্বান তিব্বতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাংয়ের ◈ সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, সেই ফারিয়াসহ তিনজন কারাগারে ◈ ক্যালিফোর্নিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে তামাকের মতো সতর্কবার্তা প্রদর্শনের বিল অনুমোদন

প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট, ২০২০, ০৮:১৩ সকাল
আপডেট : ২৪ আগস্ট, ২০২০, ০৮:১৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কুমারিকা তেল হয়ে যায় কণ্যারিকা নামে, আর ময়দায় তৈরী হয় ফেসিয়াল লাভলী

মাহফুজ নান্টু: [২] বাজারে বহুল প্রচলিত কুমারিকা তেল হয়ে যায় কণ্যারিকা নামে। মুখে ব্যবহার করার ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী হয়ে যায় ফেসিয়াল লাভলী। সুগন্ধি ফগ হয়ে যায় ফগস। বিএসটিআই এর অনুমোদনহীন নকল কেমিক্যাল দিয়ে তৈরী করা হতো এসব প্রসাধনী। বিক্রির জন্য খুবই চাকচিক্যভাবে মোড়ক তৈরী করা হয়। মোড়কে নাম লিখা হয় সুক্ষ্মভাবে। খুব মনোযোগ দিয়ে না দেখলে বুঝার উপায় নেই প্রসাধনীগুলো নকল। গত দু’বছরের অধিক সময় ধরে কুমিল্লা মোগলটুলি এলাকা থেকে বাজারজাত করা হয় এসব প্রসাধনী।

[৩] সোমবার (২৪ আগস্ট) সাড়ে ১১ টায় অভিযোগ পেয়ে কারখানাটিতে ভোক্তা অধিদপ্তর ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। কারখানাটিকে সিলগালা করা হয়। ভোক্তা অধিকার আইনে কারখানার মালিককে ৬ মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

[৪] কুমিল্লা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম বলেন, আমরা গোপন তথ্যর ভিত্তিতে জানতে পারি কুমিল্লা মোগলটুলি হাইস্কুলের পেছনের একটি বাড়ীতে নকল পণ্যর কারখানা রয়েছে। এখানে এসে দেখি দু’টি কক্ষে তৈরী হচ্ছে প্রসাধনী। তিনজন মহিলা তৈরীকৃত প্রসাধনী মোড়কজাত করছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে প্রসাধনী। কারখানায় কোন ল্যাব নেই। প্লাস্টিকের ড্রামে রাখা আটা-ময়দা। পাশে খোলা ড্রামে তেল ও ক্যামিকেল। ড্রামের আদা-ময়দা, তেল ও ক্যামিকেল মিশ্রণ করার একটি যন্ত্র। এগুলো ব্যবহার করেই তৈরী করা হতো প্রসাধনীগুলো। ৫ টি দেশী বিদেশী প্রসাধনীর ২৫ টি ক্যাটাগরির নকল পন্য তৈরী করতেন আবু সুফিয়ান। তিনি নিজেই মালিক, নিজেই টেকনিশিয়ান।

[৫] ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম আরো জানান, অননুমোদিত তৈরী করা এসব প্রসাধনী স্বাস্থ্যর জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।

বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মজিবুর রহমান বলেন, সঠিক উপায়ে ব্যবহার না হলে যে কোন ক্যামিকেল স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। মোগলটুলিতে যেভাবে প্রসাধনী তৈরী করা হয়েছে সেগুলো স্বাস্থ্যর জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরুপ। এগুলো ব্যবহারে চর্মরোগ এবং ক্যান্সার হওয়ার আশংকাই বেশী।

[৬] নকল পন্যর কারখানার মালিক মো. আবু সুফিয়ান। তার বাড়ী চান্দিনার নবাবপুর এলাকায়। মোগলটুলি এলাকায় তিন কক্ষের ভাড়া বাসায় এসব পণ্য তৈরী করেন। আবু সুফিয়ান জানান, ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ও অন্যান্য অনুষঙ্গ এনে তিনি এসব প্রসাধনী তৈরী করতেন। তিনি নিজেই কারখানার মালিক। নিজেই ক্যামিস্ট। পণ্য বাজারজাত করতেনও নিজেই। তার তৈরী প্রসাধনীর জন্য তিনি নিজেই কম্পিউটার দোকান থেকে বারকোড বানিয়ে এনেছেন। প্রসাধনী তৈরী হয়ে গেলেই প্রসাধনীর মোড়কে বসিয়ে দিতেন বারকোড। কারখানায় প্রসাধনী বোতল ও মোড়কীকরণ করতেন তিনজন নারী।

[৭] বিএসটিআইয়ের অনুমোদণ আছে কি না জানতে চাইলে আবু সুফিয়ান জানান, তিনি ট্রেড মার্কের জন্য আবেদন করেছেন। ব্যবসা পরিচালনার জন্য আর কোন অনুমোদন পত্র তার নেই।

[৮] ঘন্টাব্যাপী অভিযান শেষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সাঈদ জানান, কারখানার মালিকের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসাধনী তৈরী করতেন। নেই কোন ল্যাব। নেই কোন কেমিষ্ট। বিভিন্ন দেশী বিদেশী প্রসাধনীর আদলে নকল প্রসাধনী তৈরী করতেন। আর এমন সব অপরাধের কারনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিক আবু সুফিয়ানকে ছয়মাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করি। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সাঈদ আরো জানান, জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যহত থাকবে। সম্পাদনা: সাদেক আলী

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়