শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০৫:৫৮ সকাল
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০৫:৫৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাৎ নিয়ে কেন লুকোচুরি

ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার বৈঠকের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হচ্ছে না। বিবিসি বাংলা

বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই বৈঠকের কোন তথ্য প্রকাশ না করায় নানা রকম জল্পনা কল্পনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে প্রথম এই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাতের বিষয়টিই স্বীকারই করেনি। ভারতীয় এই কূটনীতিক দু'দিনের এক আকস্মিক সফরে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু কেন বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়নি- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গত মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ সফরে ঢাকায় আসার পর রাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে প্রায় এক ঘন্টা সময় ধরে আলোচনা করেছেন। সেই বৈঠকের পর পরই ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সূত্রে এই বৈঠকের তথ্য জানা সম্ভব হয়েছিল।

কিন্তু সেই রাতে প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কোন বৈঠক বা সাক্ষাৎ সেদিন হয়নি। ফলে সাক্ষাৎ হয়েছে কিনা - এনিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।

সেই পটভূমিতে ভারতীয় সূত্রের বরাত দিয়ে পরদিন সংবাদ মাধ্যমে সেই সাক্ষাতের খবর প্রকাশ হলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এনিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আর কিছু বলা হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুকসানা কিবরিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাৎ বা বৈঠক নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য না দেয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

"ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের যথেষ্ট তথ্য বা ইনফরমেশন নাই, এটা পরিস্কার। তার ফলে বিভিন্ন ধরণের স্পেক্যুলেশনের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। নানা কথা বার্তা ডালপালা মেলছে। এটাতো খুব একটা হেল্পফুল না।"

তিনি আরও বলেছেন, "সেখানেতো আলোচনার একটা এজেণ্ডা থাকবে। কিন্তু সে এজেণ্ডা আমরা দেখিনি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে যে দেখা হয়েছে, সেটা সম্পর্কে আমাদের কোন রকম পরিস্কারভাবে কিছু বলা হয়নি। এখানে বলা হয়েছে যে, কভিড-১৯ এর ব্যাপারে সহযোগিতা এবং এই সংকটে দুই দেশ কিভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেটাও যদি হয়ে থাকে তা পরিস্কার করে বলা উচিত ছিল।"

লাদাখ সীমান্তে ভারতের সাথে চীনের যুদ্ধ পরিস্থিতি, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ এবং করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলাতে ও ভ্যাকসিন ইস্যুতে চীনের সহযোগিতা বৃদ্ধি - এছাড়া ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার বিষয় যখন ছিল, তখন এসব ইস্যুর পটভূমিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। শ্রিংলাও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন।

কিন্তু দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে বৈঠকের পর করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পেতে ভারতের সহযোগিতা করার বিষয়কে সামনে আনা হয়। বিশ্লেষকরা বলেছেন, ভ্যাকসিন কূটনীতির আড়ালে কি ছিল, তা স্পষ্ট করা না হলে বিভিন্ন প্রশ্ন থাকবেই।

সাবেক একজন রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেছেন, "সফরটাওতো ভারতের উদ্যোগ থেকে - সেটা বোঝা যাচ্ছে। ভারতের দিক থেকে উদ্যোগেই হয়েছে। ভারতের দিক থেকে কিছু একটা বক্তব্য আছে বা বার্তা আছে, সেই বার্তাটা পৌঁছে দেয়ার জন্য তার আসা। এবং সেই সুবাদে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে।"

"এখন যদি তাদের বার্তা থাকে, তারা হয়তো বার্তা দিয়েছে। আমরা বার্তাটা শুনেছি। আমাদের দিক থেকে হয়তো সেটার ব্যাপারে এখনও কোন বক্তব্য নাই। সেজন্য আমরা জানাচ্ছি না। এটাও হতে পারে।"

বিষয়টাতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্যই দেয়া হচ্ছে না। তবে সাধারণত বিদেশি কোন রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলেও তা নিয়ে সরকারিভাবে খবর প্রকাশ করা হয়।

অধ্যাপক রুকসানা খন্দকার বলেছেন, ভারত এবং চীন - প্রভাবশালী এই দুই দেশেরই এই অঞ্চলের রাজনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশে স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশেরও নিজের স্বার্থ থেকে দেশ দু'টির সাথে সমানতালে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা বেশ জটিল বিষয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফরের কিছু বিষয় স্পষ্ট না করার ক্ষেত্রে এটিও একটি কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

তবে একজন সাবেক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি যে দীর্ঘ সময়েও হয়নি - এর সাথে ভারতের সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে নানা প্রচারণা এবং দ্বিপাক্ষিক কিছু বিষয়ে সম্প্রতি ভারতের সাথেই বাংলাদেশের সম্পর্কে ঘাটতি হতে পারে। সেজন্য বাংলাদেশ বিষয়গুলো সেভাবে তুলে ধরেনি বলে তার ধারণা।

এদিকে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বললে তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে এটুকুই বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তার সফরের সময় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেটা আনুষ্ঠানিক কিছু ছিল না। সেজন্য তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কিছু বলার প্রয়োজন নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়