সোহাগ হাসান : [২] সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল দিনভর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দখলে থাকার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনেই যেন মোটরসাইকেলে গ্যারেজে পরিনিত হয়েছে।
[৩] বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগ কক্ষের সামনে প্রতিদিন অবস্থান করেন প্রায় অর্ধশতাধিক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবাধ বিচরণ করতেও দেখা যায় ।
[৪] সরেজমিনে মঙ্গল ও বুধবার সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা দলে দলে ভাগ হয়ে হাসপাতালের ভেতরে ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে অবস্থান নিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাহেঁচড়া করেন। ছবি তোলেন, দেখেন কোন কোম্পানির ওষুধ লেখা হয়েছে। তা জানার চেষ্টা করেন। কেউ সুযোগ বুঝেই ঢুকে পড়েন ডাক্তারের কক্ষে। রোগী দেখার সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজ কোম্পানির ওষুধ লেখানোর চেষ্টা করেন।
[৫] অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিজেদের কোম্পানির ওষুধ না লিখলে চিকিৎসকের কাছে কৈফিয়ত চাইতেও অনেকে দ্বিধা করেন না। এতে হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
[৬] সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, চিকিৎসকরা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন। এর প্রধান কারণ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে বিভিন্ন উপহার ও সুবিধা নেন। এসব উপহারের মধ্যে নগদ পুশমানি, রয়েছে ঘরে ফার্নিচার, এসি, ফ্রিজ, টেলিভিশন, ল্যাপটপ ইত্যাদি। এইসব উপহার কোম্পানির পক্ষ থেকেই সরবরাহ করা হয়।
হাসপাতালে সরকারী বরাদ্দে যত মানসম্পন্ন ওষুধ সরবরাহ থাকুক না কেন তার কোন গুরুত্ব পায়না পুশমানি ও উপহার সামগ্রী গ্রহন কারণে।
[৭] এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ক্রমে দেওয়ালে লেখা রয়েছেন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০মিনিট পর্যন্ত হাসপাতালের অন্ত: ও বহি: বিভাগে কোন ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রবেশ ও ভিজিট করতে পারবে না। (প্রবেশ করলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)। এমন নিদের্শনা থাকলেও মানছেন না কোন রিপ্রেজেন্টেটিভরা।
[৮] হাসপাতালে কর্মরত নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলছেন, কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই হাসপাতাল দখল করে নিয়েছে রিপ্রেজেন্টেটিভরা।
[৯] তাদের এমন দৌরাত্ম হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। রোগীসহ তাদের স্বজনরাও চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।
এদিকে ছবি ওঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মী ফলো করলে দ্রুত হাসপাতাল থেকে বের হয়ে অবস্থান নেন হাসপাতালের মূল গেটের সামনে।
[১০] সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো: শাজাহান আলী বলেন, এ বিষয়ে আর এমও সাহেবের সাথে কথা বলেন।
[১১] এ বিষয়ে আর এমও ডা.মো.ফরিদুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
[১২] সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.মো.জাহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী ২২শে আগষ্ট মিটিং রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :