রাণীশংকৈল প্রতিনিধি : [২] ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে গোগর গ্রামের চাঞ্চ্যলকর গরু ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী হত্যা মামলার অজ্ঞাত ঘটনা খুব দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে উদঘাটন এবং হত্যার আলামত উদ্ধার ও আসামিদের আটক করে, প্রশংসিত পুলিশ এবার সমালোচনার মুখে পড়েছে। খোদ সরকারি কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে থাকা অবস্থায়অতর্কিতভাবে মারপিট করার মামলার প্রধান আসামী এখনো অধরা থাকায়?
[৩] ঘটনার দশ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার প্রধান আসামি আটক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, উপজেলায় কর্মরত সরকারি চাকুরীজীবিরা। এ নিয়ে সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝেচরম ক্ষোভ সঞ্চার হচ্ছে। এদিকে, মামলা দায়েরের চারদিন পরে, পুলিশের হাতে আটককৃত দ্বিতীয় আসামি জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে বলে জানা গেছে।
[৪] সোমবার (২৭ জুলাই) বিকেলে পৌর শহরের বন্দর চৌরাস্তা নামক এলাকায় সড়কে সাইড নেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায়কে অতর্কিতভাবে মারপিট করার অভিযোগ উঠে। পৌর শহরের ভান্ডারা গ্রামের মৃত আম্বর হাজ্বীর ছেলে ফারুক হোসেন(৩০) ও আবুল কালামের ছেলে লেমন হোসেন (২৫) নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এদিন রাতেই ঐ দুই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে এ সরকারি কর্মকর্তা।
[৫] উপজেলা পরিষদে কর্মরত সরকারি চাকুরীজীবিদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা হতাশ হয়েছি! মামলার প্রধান আসামি বা প্রধান দোষী এখনো আটক না হওয়ায়। আমরা আশা করেছিলাম আমাদের অফিসারকে অন্যায়ভাবে মারপিট দেয়ার আসামিদের আটকে পুলিশের চরম সহযোগিতা থাকবে। তাদের সর্বোচ্চ মেধা শ্রম ও শক্তি দিয়ে আসামীদের ধরতে সক্ষম হবে। সেই প্রত্যাশায় এখন গুড়েবালি।
[৬] তারা জানান, মামলা দায়েরের ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনো আসামিকে পুলিশ আটকে ব্যার্থ হওয়ায়। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) উপজেলায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরিষদের মুল চত্বরে “পুলিশ প্রশাসন নিরব কেন জবাব চাই’ দিতে হবে’ সন্ত্রাসী ফারুক ও লেমনের দ্রুত বিচার চাই” রাণীশংকৈলে সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ চাই ইত্যাদি লেখা ফেষ্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর পরে, দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদাকে (ইউএনও) স্মারকলিপি দেয়া হয়। সরকারি চাকুরীজীবিদের এমন প্রতিবাদ জানানোর পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ বাহিনী। পরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার (৩১জুলাই) ভোরে মামলার দ্বিতীয় আসামী লেমনকে উপজেলার হোসেনগাঁও ইউপি’র রাণীদিঘী নামক এলাকার জনৈক রাজনৈতিক নেতার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চত্বর থেকে আটক করে পুলিশ। তবে এখনো মামলার প্রধান আসামী ফারুককে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
[৭] এদিকে মামলার আটককৃত দ্বিতীয় আসামী লেমন ঠাকুরগাঁও আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে বলে লেমন নিজেই গত বৃহস্পতিবার(৬ জুলাই) মুঠোফোনে নিশ্চিত করে বলেন, আমাকে অহেতুক এ মামলায় আসামী করা হয়েছে। সেদিন সড়কে যানজট হওয়ায় তার গাড়ী সাইড করতে সাধারণভাবে কথা বলতেই তিনিই আমার সাথে উল্টো খারাপ আচরণ করেন।
[৮] মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) আব্দুল মালেক গত বৃহস্পতিবার (৬জুলাই) মুঠোফোনে বলেন, দ্বিতীয় আসামীকে আটক করে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। আর মামলার প্রধান আসামীকে আটকের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
[৯] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, এতদিনেও প্রধান আসামী আটক না হওয়ায় আমরা অসহায়বোধ মনে করছি। হতাশায় রয়েছি।
[১০] থানার ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক আব্দুল মান্নান বলেন, এখনো এক নম্বর আসামী ধরা পড়েনি। তাকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।