ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সংরক্ষণ করা কোরবানির পশুর চামড়া থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় তা জব্দ করেছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
পরে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জব্দকৃত চামড়া দক্ষিণ সুরমার পারাইরচক এলাকায় নিয়ে গর্ত করে মাটির নিচ পুতে রাখেন। তবে চামড়ার সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, চামড়ার সংখ্যা সহস্রাধিক। ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন জানান, চামড়া ছিল ৬৫০টি।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া ঈদের দিন বিক্রি না হওয়ায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল হক শেরীন এসব চমড়ার সংরক্ষণের জন্য সিলেটে নিয়ে আসেন।
নগরীর আম্বর এলাকায় থাকা তার নিজস্ব প্লটে রাখা হয় চামড়াগুলো।কিন্তু সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ না করায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
আশপাশের লোকজন এই দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে বিষয়টি অবহিত করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে।খবর পেয়ে মেয়র ঘটনাস্থলে গিয়ে অযত্নে ফেলে রাখা চামড়াগুলো জব্দ করেন।
পবে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়ে কয়েকটি ট্রাকে করে এসব চামড়া নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ সুরমার পরাইরচকে সিসিকের ডাম্পিং জোনে।
সেখানে বড় গর্ত খুঁড়ে মাটি পুতে রাখা হয় চামড়াগুলো। এ নিয়ে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দেন।
এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, 'কোরবানির পশুর চামড়া ও বর্জ্য পরিষ্কার হয়েছে কি না তা দেখার জন্য আমি আজ রোববার সকালে বের হই। দুপুর বারোটার দিকে এক শিক্ষিকা ফোন দিয়ে বলেন, আম্বরখানায় চামড়া এবং পশুর বর্জ্যে সারা এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
তারপর আমরা আম্বরখানায় সেই জায়গায় গিয়ে দেখি অনেক চামড়া ফেলে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খবর নিয়ে জানলাম এটা সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর উপজেলার এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের জায়গা।এসময় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জগন্নাথপুরে তিনি চামড়া ফেলার জায়গা না পেয়ে এখানে এনে ফেলেছেন।
চেয়ারম্যান মেয়র আরিফকে তার বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেয়া যায় তা নিতে বলেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরীন বলেন, ঈদের দিন ইউনিয়নে কোরবানি দেয়া পশুর যেসব চামড়া বিক্রি হয়নি তার অপচয়রোধে তিনি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। এলাকায় মাটি চাপা দেয়া বা নদীতে ফেলে দেয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আছে।
এ জন্য গাড়ি দিয়ে চামড়াগুলো সিলেট নগরীর আম্বরখানায় থাকা আমার নিজস্ব প্লটে নিয়ে রাখা হয় সংরক্ষণের জন্য।কিন্তু রাতে পর্যাপ্ত লবন না পাওয়ায় সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা যায়নি।
সকাল থেকে প্রয়োজনীয় লবন এনে চামড়াগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেই চেষ্টায় ছিলাম।এর মধ্যে সিটি মেয়র এসব চামড়া জব্দ করে নিয়ে যান।
তিনি দাবি করেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে এ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রীয় সম্পাদ রক্ষা করতে গিয়ে তিনি এখন অপবাদের শিকার হলেন বলেও মন্তব্য করেন এই ইউপি চেয়ারম্যান।যুগান্তর, প্রিয়ডটকম