সুজিৎ নন্দী : [২] করোনা মোকাবেলায় রাজধানীসহ সারাদেশের গণপূর্ত অধিদফতরের প্রকৌশলীরা ঈদের দিনসহ পুরো ছুটিতে মাঠে থাকবেন। রাজধানীর পাশাপাশি সব জেলায় হাসপাতালগুলোতে কারিগরি সহায়তা ও অবকাঠামো নির্মাণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কাজ শেষ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। গতানুগতিক কাজের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবাসহ মেডিকেলের সকল স্থাপনা নির্মাণের কাজই নির্দিষ্ট সময়ে আগেই শেষ করেছে।
[৩] গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে গণপূর্তের প্রকৌশলীরা কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে চিকিৎসকদের পাশাপাশি গণপূর্তের প্রকৌশলীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। ঈদের দিনসহ পুরোছুটিতে কাজ করবে প্রকৌশলীরা। সংস্থার আওতাধীন অফিস ও আাবাসিক এলাকায় নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করাসহ পরিষ্কার পরিছন্নতা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
[৪] তিনি আরো বলেন, প্রকৌশলীরা সংস্থার পক্ষ থেকে সুরক্ষা পোশাক নিয়ে তারা হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
[৫] সূত্র জানান, প্রতিটি ডিভিশনের প্রকৌশলীরা ঈদের ছুটিতে নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করবেন। ইতোমধ্যে আশকোনার হজ্ব ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করা, ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে ৯শ’রও শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ, ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন, ১১টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপন, আইইডিসিআর এর নতুন ১০ তলা ভবনের নীচতলায় স্যাম্পল কালেকশন কক্ষ ও ক্যান্টিন কাজ শেষ হলেও ছুটির সময় তারা মাঠে থাকবেন।
[৬] বিসিএস পাবলিক ওয়াকস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খালেদ হোসাইন বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনার শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। ঈদের ছুটি ও ঈদের দিনও প্রকৌশলীরা কাজ করবেন। সব শক্তি দিয়ে সহায়তা করতে ইতিমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের ট্রমা সেন্টারসহ জেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, ১১ টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপনসহ বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ বেড বসানো হয়েছে।
[৭] বিসিএস পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়াস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নগর গনপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত উল্লাহ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আমরা অনেক কাজ শেষ করেছি। প্রতিবছর ঈদের সময় প্রকৌশলীরা কর্মক্ষেত্রে থেকেছে। এবার বিশেষ ভাবে থাকবে। তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, আইসোলেশন ইউনিট, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, করোনা ইউনিট স্থাপন ছাড়াও এসব স্থাপনাগুলোতে নিরবিছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ জীবানুনাশক ছিটানোর কাজ নিয়মিত করছে।
[৮] গণপূর্তের একাধিক প্রকৌশলী জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা মেডিকেলসহ ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে ৯শ’ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে।