শিরোনাম
◈ ভিসা নীতি নয়, অন্য আইনে সাবেক সেনাপ্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ গাজা যুদ্ধ নিয়ে আইসিসি’র গ্রেপ্তার প্রষ্টোর তীব্র নিন্দা নেতানিয়াহুর ◈ ২ ঘণ্টায় ৭ থেকে ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে: ইসি  ◈ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের ওপর  সপরিবারে ভিসানিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র ◈ সংসদ সদস্য আজিমের অবস্থান জেনেছে ভারত পুলিশ ◈ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে হেলিকপ্টারে কী করছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে ‘শেষ’ ভিডিও ◈ ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক ◈ প্রতি বছর এপ্রিলের গরম ৪০ ডিগ্রি ছাড়াবে, বলছে রিপোর্ট ◈ ডেমরায় পুলিশের রাবার বুলেট-টিয়ারশেলে ছত্রভঙ্গ অটোরিকশা চালকরা ◈ বিশ্বের দূষিত বাতাসের তালিকায় সোমবার ঢাকা ছিল ষষ্ঠ

প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৩:০০ রাত
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২০, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ৬ বছর, রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশ স্বজনরা

মাসুদ আলম : [২] নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের ৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। আলোচিত ওই সাত খুনের নৃশংসতা সারাদেশেই সাড়া ফেলেছিলো। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত ছিলোঅ ইস্যুটি। তবে আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর পূর্ণ হলেও হত্যা মামলার রায় এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আদালতের পরে হাইকোর্টে দ্রুত রায় ঘোষণা করা হলেও আপিল বিভাগে রায়টি নিষ্পত্তি হতে ধীরগতির কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা। তাদের দাবি, উচ্চ আদালত যেন দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির রায় কার্যকর করেন।

[৩] এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

[৪] নিম্ন আদালতের পর উচ্চ আদালত ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ জনের হত্যাকাণ্ডের আদেশ বহাল রেখে বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন। দেড় বছর ধরে মামলাটি আপিল বিভাগে থাকায় নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জবাসী সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন

[৫] আলোচিত সাত খুনে নিহতরা হলেন—নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়ির চালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়ি চালক ইব্রাহিম। ৭ জন নিহতের পরিবারের মধ্যে ৫টি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

[৬] সাত খুনে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিচারের আশায় আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ ১৫ জনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু প্রায় দেড় বছর ধরে মামলাতে আপিল বিভাগে ঝুলে থাকার কারণে আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। তিনি দাবি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যেন দ্রুত মামলাটির শুনানির শেষ করে রায় প্রদান করেন। উচ্চ আদালত থেকে সাত খুনের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দণ্ডাদেশসহ যে রায়টি হয়েছে সেই রায়টি যেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বহাল থাকে। আমরা অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন সাত খুন মামলায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে। বিউটি বলেন, সাত খুনে সাতটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এদের মধ্যে ৫টি পরিবার এখন চরম অর্থকষ্টে আছে।

[৭] নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়ের বলেন, আমারা নিম্ন আদালত থেকে আসামিদের ফাঁসির রায়টি দ্রæততম সময়ে পেয়েছি। কিন্তু মামলাটি এখন আপিল বিভাগে আটকে আছে। আমরা বর্তমানে সাত খুন মামলাটি নিয়ে শঙ্কিত। কারণ আসামিরা খুবই প্রভাবশালী ও টাকাওয়ালা লোক। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুন মামলাটি উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সাত খুন মামলায় যে সাজাটি বহাল রেখেন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেছেন। আশা করি এ বছরই শেষ হয়ে যাবে। এ মামলাটি আপিল বিভাগে শেষ হলে এরপর রিভিউ হবে।

[৮] তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২৬ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় হয়। আসামি পক্ষের আপিলের পর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালতে যেখানে ২৬ জনের ফাঁসি আদেশ ছিল সেখানে হাইকোর্ট ১৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। তবে মূল আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট যে রায়টি দিয়েছেন আমরা আশা করি আপিল বিভাগেও সেই একই রায়টি বহাল থাকবে।

[৯] উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুলসহ ৬ জন ও ১ মে আরেকজনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর শান্তিরচর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়