দেবদুলাল মুন্না : আমার কেন যেন মনে হয়েছিলো, সরকার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পাশে নেই। আপনাদের মনে আছে তিনি মাত্র ৩০০ টাকা মূল্যে বিক্রির জন্য কিট বানানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরকার তখন সাড়া দিয়েছিলো। এরপর কী ঘটলো? তিনি বানানো শুরু করলেন। যেদিন উৎপাদন শেষে জমা দেবেন মানে ১১ এপ্রিলের আগের দিন রাতে তার ল্যাবের বিদ্যুৎ চলে গেলো। মানে শেষ। কিন্তু তিনি তো হাল ছাড়ার মানুষ নন। আবার শুরু করলেন কাজ। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো বিদ্যুতের আর সমস্যা হবে না। হলোও না। তার পক্ষের লোককে এর জন্য গত কয়েকদিনে ওষুধ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। এ নিয়ে ২৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসের টেস্টিং কিট হস্তান্তর করার কথা ছিলো সরকারের কাছে। কিন্তু টেস্টিং কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আসেননি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো প্রতিনিধি। আসেননি ওষুধ প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তাও। যদিও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণস্বাস্থ্যের টেস্টিং কিট চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিলো। গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো, তিনিও কোনো উত্তর দেননি। ফলে এখন তারা এসব কিট নিজ উদ্যোগে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে পৌঁছে দেবেন।
বুঝলাম তিনি পৌঁছে দেবেন। কিন্তু কি মনে হয়, এর সুফল আমরা পাবো কী? এখানে আরেকটি ব্যাপার, হয়তো সরকার এই মহামারিকালে প্রকাশ্যে বাধা দিলে সমালোচনার সম্মুখীন হবে বলে ‘না’ করেনি। কিন্তু চাচ্ছে না আসলে। সরকার কিট আমদানি করলে পাবে শতকোটি টাকার কমিশন। আর গণস্বাস্থ্যেরটা নিলে পাবে না কিছুই, এটার তো হিসাব মনে রাখতে হবে আপনাদের। মনে রাখতে হবে অনুমোদন দেওয়ার আগে সরকারপক্ষীয়রা তো ন্যূনতম সৌজন্যতাবশত ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠানে যেতে পারতেন। আন্তরিকতা দূরে থাক। আপাতদৃষ্টিতে জাফরুল্লাহকে আপনাদের সরল মনে হচ্ছে? আমার কাছে কিন্তু তাও মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এ নিয়ে তিনিও সরকার বা রাষ্ট্রের নিস্পৃহতার যে মুখোশ সেটিকে উন্মোচন করতে যাচ্ছেন। মানে প্রকাশ্যে একরকম অপ্রকাশ্যে আরেক রকম এই তো রাজনীতির অঙ্ক কষা। শেষ অব্দি সরকার জিতলে বাংলাদেশ হারবে। এই তো?