শিরোনাম
◈ ভারত–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ: দুই দিনের বৈঠকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ ◈ পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি—আইএলওর ১০টি মৌলিক দলিল অনুমোদন করলো বাংলাদেশ ◈ প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড সাড়া—পোস্টাল ভোট অ্যাপে কোরিয়া-জাপান এগিয়ে ◈ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি খালেদা জিয়ার ◈ আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস ◈ চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ ◈ শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রা‌নে হারা‌লো  জিম্বাবুয়ে  ◈ রায়ের পর হাসিনাকে ফেরত দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে ◈ রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি, চার মাসে এলো এক লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা ◈ প্রবাসী ভোটারদের সতর্কতা: ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না দিলে পোস্টাল ভোট বাতিল

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:১৫ সকাল
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৮:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘আজহারী ভাইয়ের স্বপ্ন ছিলো, বাংলাদেশে একটি ইসলামিক রিসার্চ এর বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন’

নিউজ ডেস্ক :আমি দাখিল পাশ করে দারুন্নাজাতে ভর্তি হই ২০০৪ সালের আগষ্ট মাসে। তখন মিজানুর রহমান, আজহারী ছিলো না, দাখিলে ফার্স্ট বয় ও ছিলো না, সেকেন্ড ছিলো। ফার্স্ট ছিলো ফজলুল রহমান নামের আরেকজন। আমি দেখতে ছিলাম খুব ছোট, দাঁড়িও উঠেনি।তখন মিজানুর রহমানের দাঁড়ি বড় বড় ছিলো। আমরা ক্লাসমেটদের অনেককেই তুই করে বললেও তাকে, ফজলু কে সহ বেশ কয়েকজন কে ভাই বলে ডাকতাম। মাদ্রাসায় ক্লাসমেটদের আপনি বলে ডাকা আমাদের সময় প্রচলন ছিলো। এখন আছে কি না জানি না। আলিমের প্রথম পরীক্ষা থেকেই মিজান ভাই ফার্স্ট হন, আলিম পরীক্ষায় আমাদের ক্লাসে মোট ৪ জন গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলো, মিজান ভাইর সাথে আমি অধম ও ছিলাম।

২০০৬ সালে আলিম পরীক্ষা শেষ করে একেকজনের একেক গোল ছিলো।

আমি যেমন ভর্তি হলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং এ। মিজান ভাই মদীনা ও আল আজহার এর জন্য চেষ্টা করতে উচ্চতর আরবি কোর্স করেন এবং হাফেজ না হলেও কোরআন এর প্রচুর আয়াত মুখস্থ করেন।

২০০৮ সালে তিনি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য চলে যান। ২০১২ সালে মিশরে পড়া শেষ করে মালয়েশিয়া যান, মিশর থাকতে এবং মিশর ও মালয়েশিয়ার গ্যাপে আমরা অনেক বিষয় নিয়ে ই আলোচনা করছিলাম। তার স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশে একটি ইসলামিক রিসার্চ এর বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন। একটি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করবেন, আমি এসব প্রতিষ্ঠানের লিগ্যাল বিষয়গুলো দেখবো।

খুব স্বপ্ন নিয়ে তাফসির মাহফিল শুরু করলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় তাফসিরকারক হিসেবে পরিচিতি পেলেন, আমরাও প্রস্তুতি শুরু করলাম। কীভাবে স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়। অপেক্ষা করছিলাম পিএইচডি শেষ হওয়ার কিন্তু এর ই মাঝে আজহারী হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের সকল ধরনের মানুষের প্রধান আলোচনার বিষয় বস্তু। অনলাইন অফলাইন, সংসদ বা রাজনৈতিক মঞ্চ সবজায়গাতেই এক ই আলোচনা।

যেমনি ভক্তদের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি শত্রু সংখ্যা ও বাড়ছে। ওয়াজগুলোর যেভাবে প্রচার হচ্ছে তেমনি তাকে নিয়ে অনেক মিথ্যা বানোয়াট বিষয় ও প্রচার হচ্ছে। তার মতামত বা ফতোয়া পছন্দ না হলে তার জবাব দিতে পারবে সবাই কিন্তু তাকে নিয়ে অপপ্রচার এবং তার মাহফিল বন্ধ করে দিয়ে আল্টিমেট ক্ষতি হলো আমাদের দেশের ইসলামী শিক্ষার।

তিনি মোটামুটি বাধ্য হয়ে মালয়েশিয়া চলে গেছেন। এবার যেহেতু ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে না তাই আলোচনার বিষয় খুঁজছিলো নিন্দুকেরা এবং বের করলো এক গাড়ি, যেই গাড়িটি হলো সিংগাপুরে বিজনেস চেম্বারের সাবেক সভাপতির। এই গাড়িতে চড়ে কিছুক্ষণ ড্রাইভ করা ছাড়া আর কিছু ই আজহারী সাহেব জানেন না। মিজানুর রহমান আজহারী মালয়েশিয়া তে একা থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মিটরিতে, তার স্ত্রী সন্তান দেশে থাকেন, ওখানে গাড়ি বাড়ি তো দূরের কথা বিলাসবহুল ভাড়া বাসাও নেই।

উনি যা আয় করেছেন তা দেশেই আছে এবং বেশিরভাগ আয় ব্যয় করেছেন কিতাব কেনার পেছনে, দান সদকা করে, কিছু টাকা যা জমানো আছে তার মূল উদ্দেশ্য ইসলামী শিক্ষার সেরা একটা প্রতিষ্ঠা করা। ওনাদের কোনাপাড়ার বাসাটা ও বহু আগে থেকেই আছে যেখানে থেকেই উনি পড়াশোনা করেছেন। এমন কোন সম্পত্তির পাহাড় গড়েননি যা দিয়ে উনি বিলাসবহুল জীবন যাপন করবেন, তবে উনি ছোটবেলা থেকেই স্মার্ট ছিলেন, ভালো পোশাক ছোটবেলা থেকেই পড়েন।

এখন যদি মানুষ এভাবে আহাজারি করতে থাকে তবে আমাদের যেই উদ্দেশ্য ছিলো তা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এদেশে বিশ্বমানের ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গড়ে উঠবে না, আজহারীর মাসে ১০/২০ লাখ টাকা ইনকাম করতে বাংলাদেশে আসতে হবে না, সারাবিশ্বে ই পারবেন তবে আমরা তার জ্ঞানের ও টাকার বেনিফিট থেকেই শুধু বঞ্চিত হবো।

(লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া। লেখক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়